বাংলার দুর্গতিনাশিনী তিনিই। এবার এই বার্তা দিতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে দেবী দুর্গার মূর্তি দেখা যাবে কলকাতার উপকণ্ঠে একটি পুজোয়। আর্থিক মন্দার বাজারে পুজোর আয়োজন নিয়ে আলোচনা করতে বসে নানা পরিকল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছিল উদ্যোক্তাদের মনে। শেষমেষ তাঁদের মনে হয় একেবারে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কথা। সিদ্ধান্ত হয়, গত ১০ বছরে রাজ্যে তাঁর উন্নয়নের একাধিক প্রকল্পকে ঘিরেই সেজে উঠবে পুজো। থিমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘তুমিই ভরসা’। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেই বাংলার নারীসমাজের জন্য ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের সূচনা করেছেন মমতা। সেই লক্ষীর ভান্ডারের আদলেই গড়ে উঠবে মন্ডপ। এছাড়াও মন্ডপের আঙ্গিকে থাকবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা।
পূর্ব কলকাতার উপকণ্ঠে বাগুইআটির নজরুল পার্ক উন্নয়ন সমিতির উদ্যোক্তারাই মমতার আদলে দেবীমূর্তি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মমতার আদলে ফাইবার গ্লাসের মূর্তি গড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পী মিন্টু পালকে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর উচ্চতা ও দেহের ওজনের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হচ্ছে মূর্তি। আর সেই মূর্তির পরনে থাকবে মমতার মতোই সাদা শাড়ি এবং পায়ে হাওয়াই চপ্পল। তবে দেবী দুর্গার মতোই মূর্তির দশটি হাত থাকবে। সেই দশ হাতে অস্ত্রের বদলে থাকবে মমতার সরকারের ১০টি জনপ্রিয় প্রকল্পের নাম। প্রতিমার চালচিত্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে মুখ্যমন্ত্রীরই পরিকল্পনায় তৈরি ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো।
শিল্পী মিন্টুর কথায়, ‘এমন একটি মূর্তি তৈরির পরিকল্পনার কথা উদ্যোক্তারা আমাকে জানিয়েছিলেন। আমি আমার মতো করে মূর্তি গড়ার কাজ শুরু করে দিয়েছি। তবে এই দেবীমূর্তিটি পুজো শাস্ত্রবিধি মেনে পুজো করা হবে না। পুজোর জন্য অন্য একটি প্রথামাফিক মূর্তি গড়া হচ্ছে।’ শিল্পী আরও বলেন, ‘মূর্তি গড়ার ক্ষেত্রে তাঁর সংগ্রামী জীবন ও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে করাবিভিন্ন উন্নয়নের কাজকেই মাথায় রাখা হচ্ছে।’ পুজোর উদ্যোক্তাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতার আদলে দুর্গাপ্রতিমা গড়ার প্রয়াস এই প্রথম। উল্লেখ্য, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতার ভাবনায় দক্ষিণ কলকাতার বকুলবাগানের পুজোর মঞ্চ সাজানো হয়েছিল। তবে একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর আদলে দশভুজা মূর্তি গড়ে কোনও পুজোর থিম তৈরি হচ্ছে এই প্রথম।