কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্পগুলি ইতিমধ্যেই বিশ্বের দরবারে স্বীকৃত হয়েছে। পেয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক সম্মানও। এবার রাজ্যের মহিলাদের ক্ষমতায়নে নেওয়া এমন প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য করতে চায় বিশ্ব ব্যাঙ্কও। মহিলাদের সামাজিক সুরক্ষার জন্য ‘উইমেনস এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড ইনক্লুসিভ সোশ্যাল প্রোটেকশন প্রোগ্রাম’-এ প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য মিলতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।
বিগত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রাজ্যের যে বৃদ্ধি ঘটেছে তা ছাপিয়ে গিয়েছে দেশের গড় বৃদ্ধির হারকেও। যেখানে ২০১৭-১৮ সালে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ছিল ৭.২ শতাংশ, সেখানে রাজ্যে এই হার ৮.৯ শতাংশ। ২০১৮-১৯ সালে এই বৃদ্ধি যেখানে দেশের ছিল ৬.৮ শতাংশ, সেখানে রাজ্যে ১২.৬ শতাংশ। রাজ্যে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে প্রায় ২.৬ শতাংশ হারে। ২০৪১ সালে রাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ হবে বয়স্ক নাগরিক। এ ছাড়াও মহিলাদের কাজে যোগ দেওয়া বা ‘ফিমেল লেবার ফোর্স পার্টিসিপেশন’ জাতীয় গড়ের থেকে অনেকটাই কম। এ ক্ষেত্রে জাতীয় গড় ২৩ শতাংশ, রাজ্যের গড় ১৬ শতাংশ। তাই একদিকে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক মানুষদের পরিচর্যা, পেনশন এবং চিকিৎসা খরচ জোগানো এবং কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের আরও বেশি অংশগ্রহণ করানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই মহিলাদের উন্নয়নে একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে সাধারণ মহিলাদের ৫০০ টাকা এবং এসসি, এসটি, ওবিসি মহিলাদের ১০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে সেপ্টেম্বর থেকেই। এছাড়াও কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, বিধবাভাতা থেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড মহিলাদের নামে করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরও সামাজিক উন্নয়নের আরও কাজ রাজ্য সরকার করতে চায়। সেক্ষেত্রে চারটি ক্ষেত্রে বেছে নিয়ে পুরোমাত্রায় তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চায় রাজ্য সরকার। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় বিধবাদের তাঁদের সন্তানদের প্রতি নির্ভরশীল থাকতে হয় অথবা তাঁদের সামাজিক অবস্থান নিয়ে প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়।
একইরকমভাবে দিব্যাঙ্গদের ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। তাঁদের আয়ত্তাধীন বাড়ি বা কমিউনিটি কেন্দ্রীয় পরিচর্যার ব্যবস্থা করা, যাতে তাঁদের অত্যধিক ব্যয়সাপেক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিতে না হয়, সেই ব্যবস্থাও করতে চায় রাজ্য। পাশাপাশি, কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্পের মাধ্যমে আরও বেশি করে মহিলাদের ক্ষমতায়নের ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ক নীতি নির্ধারণের মাধ্যমে নাগরিকদের যাতে সুবিধা দেওয়া যায়, তারও ব্যবস্থা করতে চায় রাজ্য সরকার।