বয়স একশোর দোরগোড়ায়। বাঁচার ইচ্ছাও প্রবল। জীবনের শেষ কয়েকটা দিনে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লেও পরিবারের উপর যেন চাপ না পড়ে, সেই কারণেই পূর্বস্থলীর নসরতপুরের ৯৬ বছর বয়সী সরস্বতী ঘোষ ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের সুবিধা পেতে চেয়েছিলেন। আর সেই কথা ভেবে তাঁর ৭৩ বছর বয়সের মেয়ে লতিকা সরকার আবেদনও করে দেন। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের পারুলডাঙ্গা নসরতপুর হাই স্কুলে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে দাঁড়িয়ে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র সেই কার্ড হাতে পেতেই সরস্বতী দেবী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেরা মুখ্যমন্ত্রী বলে সম্বোধনও করেন।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরতপুরের বাসিন্দা সরস্বতীদেবীর মেয়ে লতিকা সরকারের বাড়িতেই থাকেন। দু’জনেরই স্বামী প্রয়াত হয়েছেন। সরকারি ভাতায় কোনওরকমে দিনও চালিয়ে নেন তাঁরা। কিন্তু শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লেই নতুন করে কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করে। কারণ চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই বললেই চলে। টিনের চালাঘরে থেকে শরীর নুইয়ে পড়লেও মনের দিক থেকে বেশ শক্ত সরস্বতীদেবী। একশো বছর বাঁচার ইচ্ছাও রয়েছে তাঁর।
‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের সুবিধা পেয়েই নবতিপর সরস্বতীদেবী বলেন, ‘শরীর খুব একটা ভাল নয়। যেকোনও সময়ে শরীর খারাপ হতেই পারে। প্রয়োজনের সময় সরকারের দেওয়া এই সুবিধা পেতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড তৈরির সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করি। কার্ড পেয়ে আমি খুবই খুশি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। আমার দেখা সেরা মুখ্যমন্ত্রী’।
বৃদ্ধার মেয়ে লতিকা সরকারও ‘স্বাস্থসাথী’ কার্ড পেয়ে বেশ খুশি। তিনিও তাঁর বক্তব্য পেশ করে বলেন, ‘দিন আনা দিন খাওয়া সংসার চলে গেলেও ভয় হয় যখন শরীরে বড় কোনও রোগের বাসা বাঁধে। তাই কিছু হওয়ার আগেই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডটা যদি করা থাকে তাহলে সহজেই অনেক সমস্যা ও মুশকিলের আসান তো হবে’। সরস্বতীদেবীর আত্মীয় অভিজিৎ মল্লিক বলেন, ‘দিদিমা আর বড়মা দু’জনেরই বয়স হয়েছে। তাই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড ওনাদের জন্য এই মূহূর্তে ভীষণ প্রয়োজন ছিল। তা পাওয়ায় আমরা খুব খুশি’।