নিজ অস্ত্রে নিজেই ঘায়েল হত হচ্ছে পাক মুলুককে। কাবুলে ক্ষমতা দখলের পরই নিজের স্বতন্ত্র সত্ত্বা প্রকাশ করতে শুরু করেছে আফগান তালিবান। এবার জঙ্গী সংগঠনটি সাফ জানিয়েছে, তেহরিক-ই-তালিবান (পাকিস্তান) জঙ্গিগোষ্ঠী আফগানিস্তানের সমস্যা নয়, এর সমাধান পাকিস্তানকেই করতে হবে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় লড়াই চালাচ্ছে একাধিক ইসলামিক জঙ্গী গোষ্ঠী। তার মধ্যে অন্যতম তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান। আফগান তালিবানেরই একটি শাখা সংগঠন এই জেহাদী দলটি। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে হত্যা করে ওই সন্ত্রাসবাদী দলটি। তারপর থেকে পাক সরকার ও টিটিপি’র সংঘাত তুঙ্গে পৌঁছেছে। এহেন পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদ আশা করেছিল যে, এবার আফগান তালিবানের মদতে তেহরিকের উপর রাশ টানতে সক্ষম হবে তারা। কিন্তু সেই আশায় পুরোপুরি জল ঢেলে দিল হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদার সংগঠনটি।
অতিসম্প্রতি জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফগান তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ বলে, “টিটিপি এমন একটি ইস্যু যার সমাধান আফগানিস্তান নয় পাকিস্তানকেই করতে হবে। তেহরিকে-ই-তালিবানের লড়াই বৈধ কি অবৈধ, সেই সিদ্ধান্ত পাকিস্তান ও সে দেশের মোল্লা বা ধর্মীয় নেতাদেরই নিতে হবে।” বিশ্লেষকদের মতে, জাবিউল্লা মুজাহিদের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, আপাতত পাক তালিবানের কাজে হস্তক্ষেপ করবে না আফগান তালিবান। এবং দুই দলের গভীর সম্পর্ক ভিবিষ্যতে পাকিস্তানরের জন্য আরও বড় বিপদ ডেকে আনবে। বরাবরই সন্ত্রাসবাদীদের ‘ভাল’ ও ‘মন্দ’ দুই শ্রেণিবিভাগ দেখা গেছে। ইসলামাবাদের কাছে আফগান তালিবান ও ভারত বিরোধী জঙ্গী সংগঠনগুলি ‘ভাল’। আবার তেহরিক-ই -তালিবানের মতো সংগঠনগুলি যারা পাকিস্তানেও শরিয়ত বলবৎ করত্ব চায় তারা ‘খারাপ’। আর এই দ্বিচারিতার মূল্য কড়ায় গণ্ডায় চোকাতে হচ্ছে দেশটিকে। লাল মসজিদের হামলাও এমন দু’মুখো নীতির ভয়াবহ প্রতিফলন। আফগানিস্তানে আমেরিকার পক্ষে থাকলেও গোপনে তালিবানকে হাতিয়ার ও প্রশিক্ষণ জোগান দিয়ে এসেছে আইএসআই। এবার তারাই পাকিস্তানের জন্য বড় বিপদ হয়ে উঠতে চলেছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।