নৃশংস ঘটনার সাক্ষী রইল মধ্যপ্রদেশ। চুরির অপবাদে এক ব্যক্তিকে প্রথমে লাগাতার মারধর করে তার পর ট্রাকের সঙ্গে পায়ে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়া হল। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি সেখানেই প্রাণ হারান। নেটমাধ্যমে ঘটনাটির একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কমল নাথ। যথারীতি শিউরে উঠেছেন নেটিজেনরা। কমল জানতে চেয়েছেন “মধ্যপ্রদেশে এ সব কী হচ্ছে…? উপজাতি সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে এটি কী ধরনের বর্বরতা?” । ভিডিওটি পোস্ট করে টুইটারে কমল নাথ প্রশ্ন করেছেন, “চোর সন্দেহে মানুষটির উপর এমন অত্যাচার করা হল যে তিনি মারা গেলেন?”
বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের নিমচা জেলার কালান গ্রামে ঘটেছে এই ভয়াবহ ঘটনাটি। পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিত ওই ব্যক্তি মধ্যপ্রদেশের উপজাতি ভিল সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁর নাম কানহাইয়ালাল। চুরির অভিযোগে তাঁকে মারধর করেছেন মধ্যপ্রদেশের রাজপুত শ্রেণির গুর্জর সম্প্রদায়ের কয়েক জন। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, কানহাইয়ালালের পায়ে দড়ি বেঁধে সেই দড়ি একটি ট্রাকের পিছনে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ধুলো মাখা চেহারা ও ছেঁড়া ফাটা জামার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট তাঁর উপর হওয়া অত্যাচার ও আঘাতের চিহ্ন। ভিডিওটিতে হাতজোড় করে অনুনয় করতেও দেখা যায় কানহাইয়ালালকে। তবে সে দিকে দৃকপাত না করেই চালিয়ে দেওয়া হয় ট্রাক। পিচের রাস্তায় টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয় অত্যাচারে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষটিকে।
এই ভিডিওটি রেকর্ড করেছেন নিগ্রহকারীরাই। বর্বরোচিত সেই দৃশ্য দেখে ভীত নেটাগরিকরা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির খবর পেয়েই ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন তাঁরা। নিয়ে যাওয়া হয় নিমচার সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা কানহাইয়ালালকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় মোট আট জন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মূল অভিযুক্ত-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের সন্ধান করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন কানহাইয়ালালের বাইকের সঙ্গে স্থানীয় গুর্জর সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির গাড়ির সংঘর্ষ হয়। তা থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। তবে বাইক দুর্ঘটনার পর কেন কানহাইয়ালালকে চুরির অপবাদ দেওয়া হয় তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে।