আজ টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে ফের একবার বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, বিজেপির দুই কাজ। গুলি চালানো আর গালি দেওয়া। তবে একইসঙ্গে তিনি এ-ও জানিয়ে দেন যে, সিংহের বাচ্চার মতো যাব। তোমাদের কাছে মাথা নত করতে রাজি নই।
বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বলেন, কাল তুমি থাকবে না, তোমার সঙ্গে সিআইএসএফ, বিএসএফ থাকবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে বিভাজন করেছ। ভবিষ্যৎ দেখা যাচ্ছে। দর্পণে দেখা যাচ্ছে। খেলা হবে। মরতে রাজি। দেশ বিজেপিকে বেচতে রাজি নই। মমতা জানান, ছাত্র রাজনীতি, যুব রাজনীতি এমনই রাজনীতি, যা শিকড়ে। কেন মা-মাটি-মানুষ বলেছিলাম? কারণ অবহেলিত, অসহায়, মানুষ সবাইকে নিয়েই চলার শুরু করে ছাত্রছাত্রীরা। শিক্ষকরা আমাদের জীবনের সব থেকে বড় গুরু। তাঁদের প্রণাম জানাই।
তাঁর কথায়, আমরা আজও লড়াই করে যাচ্ছি, কারণ ক্ষমতায় এসে দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছে। অনেক লড়াই করেছি। আমরা কখনও দমিনি। মানুষকে কাজ করা, মানুষকে ভালবাসা আমাদের প্রধান কাজ। ওরা রাজনীতিতে পারেন না, তাই এজেন্সি লেলিয়ে দেয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে কিছুই ছিল না। পড়াশোনা করতাম খাতায় লিখে। বই পর্যন্ত ছিল না। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছিলাম। সেদিন বুঝেছিলাম পিতা-মাতা না থাকার কী যন্ত্রণা। মর্মবেদনা বুঝেছি বলে ১০ গুণ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাবেন। অনেক ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলেছি। যাঁরা লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছেন, তাঁরাও পাবেন। তিনি বলেন, বেঙ্গল সিলিকম ভ্যালিতে ১০০ একর জমি দিয়েছি। বাংলায় লেদার কমপ্লেক্স হচ্ছে। সেখানে ৫ লক্ষ বেকার ছেলেমেয়ে কাজ পেয়েছেন। ৬৮টি শিল্পপার্ক তৈরি করেছি। তিনি বলেন, আলো হাব, মসলিন তীর্থ তৈরি করেছি। অন্যদিকে, ত্রিপুরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ত্রিপুরায় ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি ছাঁটাই। সরকারের কর্মীরা ঠিক করে বেতন পান না।
তিনি বলেন, বিজেপি পড়ুয়াদের কন্ঠ রোধ করছে। শিক্ষকদের কন্ঠরোধ করছে। ১৮ বছর কোনও বাধা মানে না, হার মানে না। আমি চাই বাংলার ছাত্রছাত্রীরা পথ দেখাক। সবার সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তুলুন। দরকার পড়লে যান। এই যে সরকার বিজেপি সরকার দানবীয় সরকার, অমানবিক সরকার। এ সরকারকে মনে রাখবেন, যারা মানুষকে ভালবাসে না, সারা দেশকে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সব সম্পদ বিক্রি করে দেবে। দেশের মাটি কখনও বিক্রি হয়? চোখ, কান, নাক বিক্রি করে দাও।
তৃণমূল নেত্রীর হুঁশিয়ারি, ইডি একটা কাগজ পাঠাবে, আমিও ইডির কাছে বস্তা ভরে কাগজ পাঠাব। তুমি সব ম্যানেজ করবে। আমরা কোর্টে যাব। দেশটা ড্যামেজ করে সব ম্যানেজ করেছ। গুজরাতের ইতিহাস আমরা জানি। তাঁর প্রশ্ন, আপনাদের হাজার হাজার টাকা বন্ডে এল কী করে? কোভিডের টিকার টাকা নেই। কখনও দেখিনি গভর্নর শিল্পপতিদের ডেকে নেগোশিয়েট করছে। খালি প্রশ্ন তৃণমূলের বিরুদ্ধে, খালি লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে। যাতে বিহারের ভোটে না দাঁড়াতে পারে, তাই জেলে পাঠিয়েছেন। কে ড্রাফট করে, আমরা জানি। আমাদের বোকা ভাববেন না।
মমতা এ-ও বলেন যে, আজ ডিজেলের দাম কত, সেই চাকা কোথায় গেল? উজালা কোথায় গেল। অন্ধকার হয়ে গেল! মানুষের পকেট কাটছেন। খালি বিশ্বভারতী নয়। সেটা এখানে বলে আপনারা দেখতে পারছেন। ওকে লোক দিতে হবে। না হলে ফাইলে সই করবেন না। মুখ্যমন্ত্রীদের এক বৈঠক ডাকতে চাই ফেডারেল স্ট্রাকচার নিয়ে।