হঠাৎ করেই টয়ট্রেনকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইউনেসকোর হেরিটেজ তালিকায় থাকা ভারতীয় রেলের এই ঐতিহ্যকে কোনও গাইডলাইন তৈরি না করে, কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে সোসাইটির সদস্যরাও। টয়ট্রেন বেসরকারি হাতে গেলে তার হেরিটেজ তকমা ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
টয়ট্রেনের বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভে দেখাতে শুরু করল পাহাড়ের অনীত থাপা গোষ্ঠী। সমতলের সুকনা থেকে দার্জিলিং-প্রতিটি স্টেশনেই বিক্ষোভ, অবস্থান অভিযান করে অনীত থাপার গোষ্ঠী। কোন ভাবেই দার্জিলিংয়ের গর্ব হেরিটেজ টয়ট্রেনকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। এমনই দাবি তুলেছে তাঁরা।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন পাহাড়ের নেতা অনীত থাপার অনুগামীরা। টয়ট্রেন বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুক্রবার দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মেনে নিতে চান না পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও। এমনকী রেলের কর্মচারীদের একটা বড় অংশও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দু’পাতার চিঠি পাঠিয়েছে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম ডেভলোপমেন্ট নেটওয়ার্ক।
যদিও বিজেপি সমর্থিত দার্জিলিংয়ের জিএনএলএফ বিধায়ক নীরজ জিম্বা পালটা দাবি করেছেন, ‘একেই আর্থিক সংকটে চলছে টয়ট্রেন। তাই টয়ট্রেনের উন্নয়নের জন্যেই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ। এতে ভালোই হবে। পরিষেবারও মানোন্নয়ন হবে।’ অন্যদিকে বেসরকারিকরণ প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ডিআরএম এসকে চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘এখনও এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোন খবর নেই। পুরোটাই সংবাদমাধ্যম থেকে দেখা। ডি এইচ আর হেরিটেজ। যতদিন আমাদের হাতে তা থাকবে, আমরা ভালো করে চালাব। উন্নত পরিষেবা দেব। এটি ইউনেস্কোর হেরিটেজ ট্রেন। পর্যটকদের ট্রেন।’