যেন যুদ্ধের শেষ দৃশ্য। চারিদিকে লাশের সারি। ছিন্নভিন্ন দেহের অংশ। আর্তনাদ। থইথই রক্তের বন্যা। বিস্ফোরণের পর এটাই কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের ছবি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, একটা দুটো নয়, কমপক্ষে পাঁচটি বিস্ফোরণ হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭০ জনের।
হামলার আশঙ্কা আগেই ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই সতর্কবার্তা জারি করেছিল আমেরিকা ও অন্যান্য প্রাশ্চাত্য দেশ। বলা হয়েছিল, কেউ কাবুল বিমান বন্দরের কাছে যাবেন না। কারণ সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি রে বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণ ঘটে কাবুল বিমানবন্দরের কাছে।
তারপরেও শেষ রক্ষা হল না। বৃহস্পতিবার রাতে দেশ ছাড়ার জন্য আফগান-সহ অন্যান্য দেশের নাগরিকরা ভিড জমিয়েছেন কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে। ঠিক তখনই আমেরিকার সেনা-ঘেরা অ্যাবি গেটের সামনে প্রথমে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়। তারপর লাগাতার আরও চারটে। ওই বিস্ফোরণের ঠিক পরেই শুরু হয় এলোপাথাড়ি গুলি-বর্ষণ।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে কীভাবে বিমানবন্দরের কাছেই অবস্থিত একটি খালের ধারে ছিন্নভিন্ন দেহগুলি পড়ে রয়েছে। কারও মাথা আছে তো, হাত-পা নেই। আবার কারও দেহটাই চার টুকরো হয়ে গিয়েছে। চেনার উপায় নেই অধিকাংশকেই। একাধিক বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ জন মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর মিলেছে।
প্রথম বিস্ফোরণের পরই সন্দেহের তির তালিবানের দিকে গেলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয়, এই হামলার পিছনে তাদের হাত নেই। তৃতীয় বিস্ফোরণের খবর নিশ্চিত হওয়ার পরই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করে আইসিস-কে। তাদের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়, একজন আত্মঘাতী বোমারুকে পাঠানো হয়েছিল মার্কিন বাহিনীর উপর হামলা চালানোর জন্য।
পাল্টা জবাব দিয়েছে আমেরিকাও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমরা ভুলব না, ক্ষমাও করব না। যারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করা হবে এবং এত সংখ্যক প্রাণহানীর জন্য তাদের মূল্য চোকাতে হবে’। পেন্টাগনের তরফে ইতিমধ্যেই পাল্টা হামলার ছক কষা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বিস্ফোরণের জেরে উদ্ধারকার্য বন্ধ করা হবে না বলেই জানিয়েছেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাককেনজি। তিনি বলেন, ‘যাই হয়ে যাক, সুস্থভাবে সমস্ত নাগরিকগের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে’।