ইস্টবেঙ্গলের অষ্টম আইএসএলে খেলা নিশ্চিত হওয়ার উল্লাসের মধ্যেই আশঙ্কা! সমর্থকেরা উচ্ছ্বসিত। কিন্তু লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ভাইচুং ভুটিয়া ও গৌতম সরকার। ৩১ অগস্টের মধ্যে ফুটবলারদের তালিকা জমা দিতে হবে সব ক্লাবকে। অথচ চুক্তি নিয়ে বিতর্কের জেরে এখনও পর্যন্ত দল গঠনের প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি লাল-হলুদে। এত অল্প সময়ের মধ্যে কি আদৌ শক্তিশালী দল গড়া সম্ভব? গত মরসুমে শেষ মুহূর্তে আইএসএলে প্রবেশ করেছিল ইস্টবেঙ্গল। এগারো দলের মধ্যে নবম স্থানে শেষ করেছিল লাল-হলুদ! এ বারও তার অশনি সঙ্কেত রয়েছে।
ভাইচুং বললেন, “আমি খুশি ইস্টবেঙ্গল শেষ পর্যন্ত আইএসএলে খেলবে। তবে চিন্তিত দেশের সর্বোচ্চ লিগে ওরা কী করবে তা নিয়ে।” কেন? ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের ব্যাখ্যা, “গত মরসুমেও শেষ মুহূর্তে কোনও মতে দল গড়ে আইএসএলে খেলেছিল ইস্টবেঙ্গল। তাই ফল একেবারেই ভাল হয়নি। এ বারও সেই সম্ভবনা প্রবল ভাবে রয়েছে। ভাল মানের ফুটবলার পাওয়ার সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ।”
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা দল গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা একাধিক। প্রথমত ফুটবলারদের বেতন বকেয়া রাখা নিয়ে এই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গল নির্বাসিত। বকেয়া মেটানোর পরেই লাল-হলুদের উপর থেকে শাস্তি প্রত্যাহার করা হবে। দ্বিতীয়ত, এই মরসুমে সই করানোর জন্য ফুটবলারদের তালিকা জমা দিয়েছিলেন কোচ রবি ফাওলার। কিন্তু কারও সঙ্গে চুক্তি করা যায়নি।
এখানেই শেষ নয়। দু’বছরের চুক্তি থাকা সত্ত্বেও চলে গিয়েছেন মাঠি স্টেনম্যান। অপেক্ষা করতে করতে হতাশ হয়ে ব্রাইট এনোবাখারে সই করেছেন কভেন্ট্রি সিটি-তে। লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা বলছেন, “মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে দল গড়তে হবে। জানি না কী হবে।” বুধবার সন্ধ্যায় কর্মসমিতির বৈঠকের পরে ক্লাব কর্তারা চিঠি দিয়ে লগ্নিকারী সংস্থাকে দল গঠনে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। আইএসএলের পাশাপাশি, কলকাতা লিগেও অংশ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
চূড়ান্ত চুক্তি তা হলে কবে স্বাক্ষরিত হবে? শ্রী সিমেন্টের ম্যানেজিং ডিরক্টর হরিমোহন বাঙুর বলছেন, “চূড়ান্ত চুক্তির ব্যাপারে এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। পরে দেখা যাবে।” চিন্তিত ভাইচুং বলছিলেন, “গত এক বছর ধরে যা চলেছে, তাতে ক্ষতি কিন্তু ইস্টবেঙ্গলেরই হয়েছে। আশা করব, মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই উদ্যোগ নেবেন সমস্যা পুরোপুরি মিটিয়ে দেওয়ার।” আর এক প্রাক্তন গৌতম সরকার বললেন, “নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য প্রত্যেক বছর যদি ক্লাব কর্তারা এই ধরনের কাজ করে যান, তা হলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে সব সময় সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়। স্থায়ী সমাধান জরুরি।”
দল গঠন নিয়ে উৎকণ্ঠাই শুধু নয়, লগ্নিকারী সংস্থা ও ইস্টবেঙ্গলের কর্তাদের মধুচন্দ্রিমার স্থায়িত্ব নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। চূড়ান্ত চুক্তি আদৌ স্বাক্ষরিত হবে কি না, তা পরিষ্কার নয়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে ময়দানে ক্লাব তাঁবুতে ফিরেই লাল-হলুদের শীর্ষ কর্তা বলে দিলেন, “ফুটবল বাঁচল, ক্লাবকেও হস্তান্তর হওয়া থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। আমরা আগের চুক্তিতেই আইএসএলে খেলব।”