বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের। সম্প্রতি স্বনামধন্য লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী সহ বেশ কিছু লেখকের রচিত ছোট গল্প বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সিলেবাস থেকে বাদ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওভারসাইট কমিটি । যা নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক মহল। ওভারসাইট কমিটির এই সিদ্ধান্তকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫ জন সদস্য ওভারসাইট কমিটির কাজকর্ম নিয়ে তাঁদের অসন্তোষ ব্যক্ত করে একটি নোট দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চম সেমেস্টারে ইংরেজির এলওসিএফ সিলে বাসে সব চেয়ে বেশি যথেচ্ছাচার করেছে ওভারসাইট কমিটি।
প্রথমে দুই দলিত সম্প্রদায়ের লেখক, বামা ও সুখরথারিনির লেখা সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরিবর্তে উঁচু জাতের লেখক রমাবাইয়ের লেখা ঢোকানো হয় সিলেবাসে।অভিযোগ, এরপর হঠাৎ করেই ইংরেজি বিভাগকে মহাশ্বেতা দেবীর লেখা এক আদিবাসী মহিলার গল্প ‘দ্রৌপদী’-কে সিলেবাস থেকে কোন কারণ না জানিয়েই বাদ দিতে বলে এই কমিটি। কমিটির এই নির্দেশের পরেই শোরগোল পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে।
একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের অভিযোগ, ১৯৯৯ সাল থেকে এই গল্পটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে রয়েছে। এই গল্পটির শিক্ষাগত গুণাগুণের জন্যই এতদিন ধরে এই গল্পটি পড়ানো হয়ে এসেছে। কিন্তু, এই গল্পের বদলে মহাশ্বেতা দেবীর মতো সাহিত্য একাডেমী, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ও পদ্ম বিভূষণ প্রাপ্ত লেখিকার অন্য কোনও গল্প সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলেই অভিযোগ। এই লেখকদের লেখা বাদ দেওয়ার কারণে সিলেবাসের মানে ঘাটতি আসবে বলেই অভিযোগ অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন যে সিলেবাস কমিটি বা কোর্স কমিটির সঙ্গে কোনরকম আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক সদস্যের অভিযোগ, দলিত, আদিবাসী, মহিলাদের বিরুদ্ধে বরাবর পক্ষপাতিত্ব করে এসেছে এই ওভারসাইট কমিটি। তাই এই সংক্রান্ত সবকিছুকে সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি এও অভিযোগ করেন, ওভারসাইট কমিটিতে দলিত বা আদিবাসী সম্প্রদায়ের কোনও সদস্য নেই। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হতে পারে এমন কেউ নেই কমিটিতে।