রোজগারের আশায় বিদেশবিভুঁইয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানে যে মাঝপথে এমন বিপত্তি আসবে তা কল্পনাতেও ছিল না। আফগান মুলুকে তালিবানরাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই ঘরে ফেরার দিন গুনছিলেন গোপালনগরের বিদ্যুৎ বিশ্বাস, পলাশ সরকার এবং রঘুনাথপুরের প্রবীর সরকার। অবশেষে স্বস্তি। সোমবার গভীর রাতে কাবুল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তিনজন।
ঘরের ছেলে নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরতে পারায় খুশির হাওয়া পরিবারে। খুশি গ্রামবাসীরাও। মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাঁদের বাড়ির সামনে ভিড় জমেছে। সাংবাদিকরা তো আছেনই, উৎসাহী গ্রামবাসীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সকলেই জানতে চান কেমন আছে কাবুল থেকে ফেরা তিন বঙ্গ সন্তান, তালিবানকে চোখের সামনে কেমন দেখল তারা।
ঘরে ফিরেও আতঙ্ক কাটছে না গোপালনগরের পাল্লা পঞ্চায়েতের শংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ বিশ্বাসের। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের ক্যাটারিংয়ের কাজ করতেন তিনি। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, চোখের সামনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জলের স্রোতের মতো কাবুল দখল করে নিল ওরা। আমরা অনেকদিন ধরেই আতঙ্কে ছিলাম।
একই সুর পলাশ সরকারের গলাতেও। তিনিও সেনার ক্যাটারিংয়ের কাজ করতেন। ঘরে ফেরার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। আতঙ্কের প্রহর গুনেছেন রাতের পর রাত। কাছের মানুষদের কাছে ফিরতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তিনি। পলাশবাবু জানিয়েছেন, – এয়ারপোর্টের বাইরে গোলাগুলি চলছিল। হামলা চালাচ্ছিল তালিবান। অনেক চেষ্টা করে কাতার হয়ে দেশে ফিরতে পেরেছেন। প্রাণ হাতে করে আফগান মুলুক থেকে ফিরতে পারাটাই অনেক বড় ব্যাপার, জানিয়েছেন পলাশ সরকার।
একে একে আমেরিকা যখন সব বড় শহর থেকে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে তখন থেকেই বাড়ি ফেরার কথা ভাবছিলাম। এখন তো ওখানে ভয়ঙ্কর অবস্থা। গুলিগোলা চলছে। জঙ্গি কবল থেকে ভারতে ফেরার কাজটা সহজ ছিল না মেনে নিয়েছেন সকলেই। তার জন্য অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।এয়ারপোর্টের বাইরেই কেটেছে রাত। শেষে কারগো প্লেনে করে কাতার পাঠানো হয় শতাধিক ভারতীয়কে। তারপর সেখান থেকে অবশেষে বাড়ি।