কাকতালীয় ঘটনাক্রম! চলতি বছরই লোকসভার মোট আসনসংখ্যা ৫৪৫ থেকে বাড়িয়ে ১,০০০ করা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এরই মধ্যে তামিলনাড়ুর লোকসভা আসন সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে তোপ দাগল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, লোকসভার আসনসংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার দরুন তামিলনাড়ু সরকারকে মোটা অঙ্কের জরিমানাও দেওয়া উচিত কেন্দ্রের।
মাদ্রাজ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, তামিলনাড়ু অন্ধ্রপ্রদেশের মতো যেসব রাজ্য সঠিকভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে তারা আজ বঞ্চিত। ১৯৬২ সালে তামিলনাড়ুর লোকসভা আসন ছিল ৪১টি। তারপর রাজ্যে সঠিকভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নীতি চালু হয়। এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধি অন্য রাজ্যের তুলনায় কমে যায়। সেকারণে ১৯৬৭ সালের লোকসভার আগে সেরাজ্যের লোকসভার আসন সংখ্যা ৪১ থেকে কমিয়ে ৩৯ করে দেওয়া হয়।
মাদ্রাজ হাই কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, ‘তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশ সঠিকভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারায় এই দুই রাজ্যে দুটি করে লোকসভা আসন কমে গিয়েছে। অথচ, যে রাজ্যগুলি জনসংখ্যা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। সেসব রাজ্যে লোকসভার আসন সংখ্যা বেশি। তারা কেন অনৈতিক সুবিধা পাবে? কেন অন্য রাজ্যগুলিকে সমসংখ্যক রাজ্যসভার আসন দিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না?’
মাদ্রাজ হাই কোর্টের বক্তব্য, প্রতি বছর একজন সাংসদ রাজ্যের উন্নয়নের জন্য মোটামুটি ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে প্রতি বছর তামিলনাড়ু ৪০০ কোটি টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মাদ্রাজ হাই কোর্ট বলছে, ১৯৬৭ সাল থেকে হিসাব করে কেন্দ্রের উচিত শুধু তামিলনাড়ুকেই ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া। শুধু তাই নয়, মাদ্রাজ হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলছে, কেন্দ্রের ভেবে দেখা উচিত সংবিধানের ৮১ নম্বর ধারা সংশোধন করা যায় কিনা। আদালত চাইছে, জনসংখ্যা কমা-বাড়ার হিসাব না করে, শুধু এলাকার আয়তনের ভিত্তিতে লোকসভা আসন নির্ধারণ করা।