এ যেন মগের মুলুক! রেস্তরাঁয় বসে শুধু চা-কফি খাওয়া যাবে। কিন্তু রাজনৈতিক আলোচনা করা যাবে না। এবার বিপ্লব দেবের রাজ্যে তৃণমূল নেতৃত্বের ওপর এমনই ফরমান জারি করল আগরতলার হোটেল কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য, ‘রেস্তরাঁয় বসতে পারেন, চা-কফি খেতে পারেন, কিন্তু রাজনৈতিক আলোচনা করবেন না।’ গত কাল এই হোটেলে দফায় দফায় বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হচ্ছিল। অভিযোগ, বিপ্লব দেব সরকারের চাপেই এমনটা করতে বাধ্য হচ্ছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হলেও যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোশহ অবশ্য হোটেল কর্তৃপক্ষকে দুষছেন না। বিজেপির হুমকিতেই এ সব হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘সবই বুঝতে পারছি। অপেক্ষা করুন, আমরাও কড়ায়-গণ্ডায় বুঝিয়ে দেব।’ সায়নী জানান, তাঁরা তিন জন ওই হোটেলে ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান আরও তিন জন। ছ’জনে মিলে একসঙ্গে বসে চা খাবেন, গল্প করবেন ভেবেই গিয়েছিলেন হোটেলের রেস্তরাঁয়। কথা শুরু হতে না-হতেই হোটেল কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক আলোচনা না করতে বললেন।
অন্যদিকে, এ নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর মতে, ‘এ মৌলিক অধিকারের উপর আক্রমণ। তিরিশের দশকের জার্মানি, ইটালির ফ্যাসিবাদেরই প্রতিধ্বনি। গণতান্ত্রিক দেশে এ সব ভাবা যায় না। তবে এটা বেশি দিন টিকবে না।’ ত্রিপুরার বিজেপি নেতাদের সতর্ক করে দিতে তাঁদের ‘রাইজ অ্যান্ড ফল অব দ্য থার্ড রাইখ’ বইটি পড়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন প্রাক্তন সাংসদ।
হোটেল নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে ঋতব্রতকেও। তিনি জানান, ‘হোটেল আমাদের রাখতে চায় না। গত বার যে হোটেলে ছিলাম, সেখানে বলা হয়েছে, আমাদের রাখা যাবে না। বাধ্য হয়ে অন্য হোটেলে উঠেছি।’ তিনি ত্রিপুরার বিজেপি নেতাদের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দেন। বলেন, তখন বিজেপি নেতারা নিত্য বাংলায় গিয়েছেন, থেকেছেন। কিন্তু তাঁদের ক্ষেত্রে এমন আচরণ করেনি তৃণমূল সরকার। তাঁর হুঁশইয়ারি, বিজেপির দাঁত-নখ যত ধারালো হবে, মানুষের প্রতিবাদ তত তীব্র হবে।