আচমকাই দিলীপ ঘোষের মর্নিং ওয়াক আর শরীরচর্চা নিয়ে প্রশংসা করলেন মমতা। রাজভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের ফাঁকে নাকি একান্তে দিলীপকে নবান্নে চা খেতে আসার আমন্ত্রন জানিয়েছেন তিনি। এমনকী, নিজের বাড়িতে কালীপুজোয় আগাম আমন্ত্রণও সেরে ফেলেছেন মমতা। অথচ পুরনো সঙ্গী শুভেন্দুর দিকে ফিরেও তাকাননি মমতা।
রাজভবনের এই ছবিটাকে এখন নানা দিক থেকে মেলাতে চাইছে বিজেপি ও রাজনৈতিক মহল। এ হেন সৌজন্যের কারণটা কী? সবটাই আচমকা? নাকি বরবরের মত এই আমন্ত্রণ আর প্রশংসার আড়ালেও মমতার পুরনো সুচতুর রাজনীতির খেলা?
রাজনৈতিক মহলের মতে, বরবরই দিলীপ সম্পর্কে নরম মমতা। আর, উল্টোটাও একই রকম। মমতার সমালোচনা করলেও ব্যক্তি মমতা, নেত্রী মমতাকে নিয়ে একাধিকবার প্রকাশ্যই অবিমিশ্র শ্রদ্ধাই প্রকাশ করেছেন দিলীপ। আবার রাজনৈতিক শত্রুতা দূরে সরিয়ে বাইপাসের ধারে, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ দিলীপকে নিজে ফোন করে তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছিলেন মমতা। দিল্লীতে এইমসে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শও দিয়েছিলেন মমতা।
দিলীপ ঘোষকে নিয়ে এহেন মন্তব্য করলেন মমতা, ঘটনাচক্রে, তখন শিয়রে বিধানসভার ৫টি আসনে উপনির্বাচন নিয়ে ‘বিরোধিতা’ করছে বিজেপি। আর, আত্মবিশ্বাস দেখালেও কিছুটা হলেও তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে তৃণমূল। পরিস্থিতি সামলাতে, দিল্লি গিয়ে নিজস্ব স্টাইলে ব্যাট করে এলেও, মমতার ছ’মাসের মেয়াদ শেষের আগে (পুজোর আগে) রাজ্যে যে কোনও মূল্যে উপনির্বাচন আটকাতে মরিয়া শুভেন্দুর বিজেপি৷ কারণ, নির্বাচন কমিশনের খাতায় এখনও বিধায়ক হবার যোগ্যতামান টপকাতে পারেননি। ৪ নভেম্বর ছয় মাসের মেয়াদ শেষ হবার আগে তাই এই উপনির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার জিতে আসাটা ভীষণ জরুরি।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মমতাকে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, তারা জানেন, মমতার প্রতিটি পদক্ষেপই অত্যন্ত সুচিন্তিত ও কুশলী। ফলে, দিলীপকে নিয়ে মমতার এই বার্তায় এসব অঙ্কের খেলাকে অস্বীকার করা যায় না।