বৃহস্পতিবার কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভায় আচমকাই শিল্পপতিদের উদ্দেশে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। এদিন বিশেষ করে তিনি কটাক্ষ করেন ১৫৩ বছরের পুরানো টাটা কোম্পানির প্রতি। মন্ত্রীর বক্তব্যে রীতিমতো অবাক হয়েছে শিল্পপতি মহল। এরপরে কেন্দ্রীয় সরকারও সিআইআইকে অনুরোধ করে মন্ত্রীর বক্তব্য তাদের ইউ টিউব চ্যানেলে যেন পুরোপুরি আপলোড না করা হয়।
সেইমতো বৃহস্পতিবার রাতে পীযূষ গোয়েলের বক্তব্য সম্পাদনা করে আপলোড করা হয়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাও ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ভোক্তাদের স্বার্থে দেশে যে আইন করা হয়েছে, তার বিরোধিতা করছে টাটা সনস। তারা কেবল নিজেদের কথাই ভাবে। টাটারা একটা-দু’টো বিদেশি কোম্পানি কিনেছে। এর ফলে কি দেশের স্বার্থের চেয়ে তাদের স্বার্থ বড় হয়ে উঠেছে?
শিবসেনার নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদি বলেন, “প্রথম সারির শিল্পপতিদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা লজ্জাজনক। মন্ত্রী বলতে চান, শিল্পপতিরা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। সিআইআইয়ের উচিত, মন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা।” কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাথ বলেন, “পীযূষ গোয়েলের মন্তব্য অসম্মানজনক।”
একটি সূত্রে জানা যায়, ই-কমার্সে বড় ধরনের বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে টাটা কোম্পানি। তারা এমন একটি অ্যাপ চালু করতে চাইছে, যার মাধ্যমে যে কোনও বড় ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র কেনা যাবে। কিন্তু সরকারের প্রস্তাবিত বিধি কার্যকরী হলে ওই ধরনের অ্যাপ চালু করা সম্ভব হবে না।
সিআইআইয়ের ওই সভায় মন্ত্রী টাটার পাশাপাশি অ্যামাজন ও ওয়ালমার্টের ফ্লিপকার্টেরও তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ওই দুই সংস্থা ই-কমার্সে বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত আইন ফাঁকি দিচ্ছে। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স এদিন মন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা বলেছে, টাটা যেভাবে সরকারের ই-কমার্স বিধির বিরোধিতা করছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
একটি সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই মাসে টাটার পক্ষ থেকে সরকারকে বলা হয়েছিল, প্রস্তাবিত ই-কমার্স বিধি তাদের ব্যবসার ক্ষতি করবে। এর ফলে স্টারবাকের মতো সংস্থা টাটার শপিং ওয়েব সাইটের মাধ্যমে তাদের পণ্য বেচতে পারবে না। পীযূষ গোয়েল বলেন, তিনি সরকারের অবস্থান ইতিমধ্যেই টাটা সনসের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরনকে জানিয়ে দিয়েছেন। শনিবার টাটা মন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে মন্তব্য করতে চায়নি।