ঘোর সমস্যায় গেরুয়াশিবির। পাহাড়ের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে বিজেপি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করতে চাইছে, এমনই মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তাদের বক্তব্য, পাহাড়ের রাজনৈতিক সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধানের নামে যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা বলা হচ্ছে, সেটা আসলে আদ্যোপান্ত নাটক। স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদেরও একইরকম অভিমত। যদিও, বিজেপি নেতারা তা মানতে নারাজ। তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ন্ত্রিত রাজ্য সরকারের সমালোচনা করছেন। সমগ্র পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর আলোড়ন ছড়িয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের পরই পাহাড়ের রাজনৈতিক ময়দান থেকে দিশেহারা হতে শুরু করেছে পদ্মশিবির। তাদের প্রতি পাহাড়বাসীরও আস্থা কিছুটা কমেছে, ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধানের দাবিতে কয়েকদিন আগে অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের (ভারতী তামাং গোষ্ঠী) নেতা এসপি শর্মা অনশন আন্দোলন করেন। তখনই স্থানীয় দু’জন বিধায়ককে নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সাংসদ রাজু বিস্তা। এরপরই পাহাড় ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করবে বলে স্থানীয় রাজনীতিতে চাউর হয়। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে সেই বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে। এনিয়ে পাহাড়ের রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। হিল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র এনবি খাবাস বলেন, “পাহাড়ের রাজনৈতিক সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত লোকসভা নির্বাচনে ভোট চায় বিজেপি। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণাপত্রেও তারা বিষয়টি উল্লেখ করেছিল। এখন ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। দেশের ক্ষমতায় আছে। কাজেই, বিজেপি যদি সত্যিই ওই সমস্যা মেটাতে চায়, তা হলে ওরা লোকসভায় বিষয়টি নিয়ে বিল আনছে না কেন? লোকসভা ভোটের আগে এই ইস্যু নিয়ে ওরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা বলেনি।”
এবিষয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার (বিমল গুরুংপন্থী) নেতা রোশন গিরি বলেন, “পাহাড়ের মাটি থেকে রাজনৈতিক অস্তিত্ব হারাতে বসেছে বিজেপি। তাই ওরা এখন ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ফঁন্দি করছে। এটা আসলে আইওয়াস। স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশেরও একইরকম অভিমত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, পাহাড়ে পদ্ম শিবিরের নিজস্ব শক্তি নেই বললেই চলে। বিভিন্ন নির্বাচনের আগে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমস্যা মেটানোর টোপ দিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলির ভোটে জয়লাভ করে পদ্ম শিবির। হয়তো ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই আবার ওরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের টোপ দিচ্ছে। তবে, ওদের এই কৌশল সকলে ধরে ফেলেছে। এবার হয়তো আর চিঁড়ে ভিজবে না।”