শহরে ফের একটি নয়া উড়ালপুল। আরও সুগম হচ্ছে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথ। ফ্লাইওভারে জুড়বে কলকাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ই এম বাইপাস ও আধুনিক উপনগরী নিউটাউন। মোট দৈর্ঘ্য সাড়ে সাত কিমি। উড়ালপুলটির একপ্রান্ত থাকবে বাইপাসের মেট্রোপলিটন মোড়ে। অন্যপ্রান্ত নিউটাউন বাসস্ট্যান্ডে। চিংড়িহাটা, নলবন ভেড়ির আল, সেক্টর ফাইভের উপর দিয়েই যাবে গাড়ি।
ফ্লাইওভার তৈরির জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার ডেকেছে কেএমডিএ। তবে কয়েকটি মাত্র নির্মাতা সংস্থা আবেদন করায় সেটি কার্যকর হচ্ছে না। ফের টেন্ডার ডাকা হবে বলে কেএমডিএ সূত্রে খবর। বাইপাস-নিউটাউন সংযোগকারী এই উড়ালপুল নির্মাণের খরচ ধরা হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা। সময়সীমা থাকছে দু’বছর।
প্রথমে কেএমডিএ ঠিক করেছিল, ‘বর্তমান ভবন’-এর উল্টোদিকে ধাপা রোডে থাকবে উড়ালপুলটির একটি প্রান্ত। সেখান থেকে ভেড়ির উপর দিয়ে গিয়ে সেটি নামবে নিউটাউনে। কিন্তু, সেক্ষেত্রে ভেড়ির মধ্যে অন্তত শ’দেড়েক পিলার বসাতে হতো। তাতে আপত্তি জানায় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। ফলে পরিকল্পনা বদল করে উড়ালপুলের প্রান্তটি মেট্রোপলিটন মোড়ের কাছে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। এ ক্ষেত্রে কোনও জলাশয়ে পিলার বসাতে হবে না। এবার পরিবেশ দপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিয়েই এগিয়েছে কেএমডিএ।
ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত বাইপাস-নিউটাউন উড়ালপুলটি এমনভাবে তৈরি হবে যাতে নির্মীয়মাণ বিমানবন্দর-গড়িয়া মেট্রো লাইনের কোনও অসুবিধা না হয়। যাঁদের সেক্টর ফাইভ বা সল্টলেকে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, তাঁরা এই উড়ালপুল ধরে অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারবেন নিউটাউনে। শহরের উপকণ্ঠে এই উপনগরীতে ইতিমধ্যে রয়েছে বেশ কিছু আইটি অফিস। তৈরি হচ্ছে সিলিকন ভ্যালি, ফিন্যান্সিয়াল হাব। বহু মানুষেরও বসবাস সেখানে। নিউটাউনের এই গুরুত্ব অনুভব করেই উড়ালপুলটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার।
দক্ষিণ বা মধ্য কলকাতা থেকে দ্রুত বিমানবন্দরে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেএমডিএ-র এই পরিকল্পনায় সেটাই বাস্তব হতে চলেছে। মা ফ্লাইওভার থেকে নেমে প্রস্তাবিত বাইপাস-নিউটাউন উড়ালপুল ধরে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে বিমানবন্দরে। এর ফলে গোটা শহরের যানবাহনের গতিও বেড়ে যাবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। অন্যদিকে, বাম আমলে নির্মিত চিংড়িহাটা উড়ালপুল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, উড়ালপুলটির প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে। বর্তমানে সেখানে ভারী যান চলাচল বন্ধ।