মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে গোমাংস বিক্রি নয়। একইসঙ্গে হিন্দু, শিখ ও জৈন সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলিতে গোমাংস ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে নয়া বিল পাশ হল আসাম বিধানসভায়।
শুক্রবার তুমুল ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনির মধ্যে অসম বিধানসভা পাশ হয় এই বিল। আর প্রতিবাদে সদন থেকে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের বিধায়করা। বলে রাখা ভাল, এর আগে ‘আসাম ক্যাটেল প্রিজার্ভেশন অ্যাক্ট ১৯৫০’-এর আওতায় শর্তসাপেক্ষে ১৪ বছরের বেশি বয়সের গবাদি পশুর জবাইয়ের অনুমতি ছিল। কিন্তু নয়া বিল পাশ হওয়ায় তা আর প্রযোজ্য হবে না বলেই মত বিশ্লেষকদের।
বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যেগুলির মতই, এই রাজ্যেও গরু বাঁচাতে এবং সংরক্ষণ করার লক্ষ্য নিয়েই এই আইন আনার তোড়জোড় শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা আগেই জানিয়েছিলেন, যে আইন নিয়ে আসা হচ্ছে তাতে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া গবাদি পশুকে ‘জবাই’ করা , খাওয়া এবং গো পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পর্যাপ্ত আইনি বিধান রাখা হয়েছে। যদি কেউ এই আইন না মানে তাহলে আইন অমান্যকারীর আট বছর পর্যন্ত জেল এবং ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হবে। কেউ যদি একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করে তাহলে তার জরিমানা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এই বিল আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশে গরু পাচার কমবে বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছিলেন, ‘কমবেশি আমরা সকলেই হিন্দুদের বংশধর। হিন্দুত্বই জীবনের একমাত্র রাস্তা। এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই’। আসলে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের পথ ধরে আসামেও শীঘ্রই আসতে চলেছে ‘লাভ জিহাদ’ আইন। সেই আইনের কথা ঘোষণা করতে গিয়েই আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হিন্দুত্বই জীবনের পন্থা। আমি বা অন্য কেউ কীভাবে এটা রুখতে পারে। এটা যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। আমরা সকলেই হিন্দুদের উত্তরসূরি। হিন্দুত্ব শুরু হয়েছে আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে। তাই এভাবে এটাকে আটকানো যায় না। যদিও হিমন্তর দাবি তিনি যে লাভ জিহাদ আইন আনতে চলেছেন, তাতে নির্দিষ্ট কোনও ধর্মের মানুষকে টার্গেট করা হবে না। যে কোনও ধর্মের মহিলারার প্রতারিত হলেই ব্যবস্থা নেবে সরকার। এবার সেই আইনের পাশাপাশি গবাদি পশু নিয়ে বিল পেশ করে হিন্দুত্ব রাজনীতিতে আরও শান দিয়েছেন তিনি বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।