করোনা পরিস্থিতির জেরে বন্ধ আছে সমস্ত স্কুল। তা বলে তো পড়াশোনা হতে দেওয়া যাবে না! তাই রেললাইনের পাশে তাদের জন্য ‘কোচিং সেন্টার’ তৈরি করল কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক গার্ড। সাউথ ওয়েস্ট ট্রাফিক গার্ডের ওসি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই কোচিং ক্লাস।
পুলিশ জানিয়েছে, মাঝেরহাট ব্রিজের কাছেই রয়েছে মধু বস্তি। এখানেই রয়েছে জনা ৩০ ছেলে ও মেয়ে, যারা প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। তাদের মধ্যে অনেকেই পড়াশোনা করে স্কুলে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তাদের স্কুল বন্ধ। পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতটা ভাল নয় যে, অনলাইন ক্লাস করতে পারবে।
তাই এই মানবিক উদ্যোগ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এহেন পদক্ষেপে রীতিমতো প্রশংসার ঝড় বয়ে গিয়েছে। নিজের কর্তব্যের পাশাপাশি মহামারী আবহে শিশুদের পড়াশোনার এই উদ্যোগে নতুন আশার আলো দেখতে পেয়েছেন মধু বস্তির বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, এতদিন পর্যন্ত শোনা যাচ্ছিল, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এলে স্কুল খোলা হলে আগে খোলা হবে উঁচু ক্লাসগুলি। পরে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের কথা ভাবা হবে। কিন্তু সম্প্রতি এআইআইএমএস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছিলেন, শিশুদের শরীরে ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক স্কুলগুলি খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা যেতেই পারে। তাই তারা যাতে দিন কাটায় হেসেখেলে। কোনও বিপথে না যায়, সেই জন্যই এই উদ্যোগ নেন ট্রাফিক গার্ডের ওসি। বসতির কাছে রেললাইনের পাশে গাছের তলায় শুরু হয়েছে কোচিং ক্লাস। প্রত্যেকদিন বিকেলে পুলিশকর্মী ও পুলিশ আধিকারিকরাই ব্যস্ততার মধ্যে থেকে সময় বের করে শিক্ষক ও শিক্ষিকার ভূমিকায় নেমেছেন।
তাঁরাই দিনের আলো থাকতে থাকতে পড়াচ্ছেন তাদের। আগেই এই অঞ্চলের শিশু ও কিশোর কিশোরীদের জন্য পুলিশ দুধ, বিস্কুট ও অন্যান্য খাবারের আয়োজন করেছিল। এবার খাতা, বই, পেন্সিল, পেন ও পড়াশোনার সরঞ্জামেরও আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।