শেষমেশ মোদী সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ ও কার্যকলাপে তিতিবিরক্ত হয়ে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন টুইটারের ভারতের প্রধান মণীশ মাহেশ্বরী। শিগগিরই তিনি মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিচ্ছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে টুইটার ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের (এমডি) দায়িত্ব ছাড়লেও সংস্থা ছাড়ছেন না মণীশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংস্থার সিনিয়র ডিরেক্টরের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। লোকসভা ভোটের আগেই ভারতে টুইটার প্রধানের পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন মণীশ মাহেশ্বরী। গত ২ বছরের বেশি সময় ধরে দেশে টুইটারকে জনপ্রিয় করতে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন। স্বাধীনচেতা মণীশের ঋজু মনোভাব পছন্দ হয়নি মোদী সরকারের। ফলে একাধিকবার টুইটারের ভারতের প্রধানের সঙ্গে মোদী সরকারের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্ঘাত তুঙ্গে পৌঁছয়।
উল্লেখ্য, মণীশের জমানাতেই লাগাতার ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অপরাধে বিজেপির কট্টর সমর্থক তথা বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতের টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়। আরএসএস প্রধান তথা মোদী সরকারের রাজনৈতিক অভিভাবক মোহন ভাগবতের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ব্লু্-টিক সরিয়ে নেওয়া হয়। এমনকী বাক স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে নতুন যে তথ্য-প্রযুক্তি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, তার বিরোধিতায়ও সরব হয়েছিলেন ভারতের টুইটার প্রধান।
মণীশের এমন মনোভাবেই কার্যত মাথাব্যথা বাড়িয়েছিল নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির শীর্ষ মহল। গত কয়েক মাসে টুইটারের ভারত প্রধানের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ, বিহার সহ একাধিক রাজ্যে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মণীশকে গ্রেফতারেও সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছিল যোগী রাজ্যের পুলিশ। যদিও কর্নাটক হাইকোর্টের নির্দেশে সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। ভারতে থাকলেই মোদী সরকারের লাগাতার প্রতিহিংসার মুখে পড়তে হবে এমন আশঙ্কায় দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন টুইটার ইন্ডিয়ার এমডি। সূত্রের খবর, মার্কিন মুলুকে গিয়ে টুইটারের সিনিয়র ডিরেক্টর রেভিনিউ স্ট্র্যাটেজি ও অপারেশনসের দায়িত্ব সামলাবেন মণীশ। ভারতে গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য মণীশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন টুইটারের শীর্ষ আধিকারিকরা।