এর আগে খেলরত্ন পুরস্কার ধ্যানচাঁদের নামে করার সরকারি টুইটে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর ছবিতে কার্যত ঢাকা পড়ে গিয়েছেন হকির জাদুকর। সোমবার প্রায় তারই পুনরাবৃত্তি টোকিয়ো অলিম্পিক্সে পদকজয়ীদের সরকারি সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে। মঞ্চের পিছনে ছবির সিংহ ভাগ জুড়ে মোদীর মুখ। সেই তুলনায় একেবারে ছোট ছোট সাত বৃত্তে সাত পদকজয়ী! এ ছবি সামনে আসার পরেই সমালোচনা, বিতর্কের ঝর উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনও কটাক্ষ ধেয়ে এসেছে যে, ‘মেডেল আসলে জিতলেন কে? নীরজ চোপড়া, মীরাবাই চানু, পি ভি সিন্ধুরা? না কি উনি?’
অলিম্পিক্স চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী কখনও পদকজয়ী অ্যাথলিটদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন, আবার কখনও সান্ত্বনা দিয়েছেন একটুর জন্য ব্রোঞ্জ হারানো মহিলা হকি দলকে। দ্রুত সেই ছবি সংবাদ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে সরকার এবং বিজেপি। এসব দেখেই এবার মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত বাজেটেও ক্রীড়া খাতে ২৩০ কোটি টাকা ছাঁটাই করেছে মোদী সরকার। অথচ এখন অলিম্পিক্সের ভাল ফলকে নিজেদের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে মাঠে নেমে পড়েছে তারা।
শুধু তা-ই নয়। বিজেপির এই চেষ্টাকে বেআব্রু করতে হরিয়ানা সরকারকে নিশানা করেছেন রাহুল। তাঁর টুইট, ‘শুধু শুকনো অভিনন্দন না জানিয়ে খেলোয়াড়দের বকেয়া পুরস্কারের টাকা দিন।…ভিডিয়ো কল অনেক হয়েছে। এবার ঘোষিত পুরস্কারের টাকাটা অন্তত দেওয়া হোক।’ সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন হরিয়ানার ক্রীড়াবিদের পূর্ব প্রতিশ্রুত টাকা না পাওয়ার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর। নিশানা হরিয়ানা সরকার হলেও, কটাক্ষের তির মোদীর দিকেও। এমনিতেই হরিয়ানা সরকার ও বিজেপিকে আরও অস্বস্তিতে ফেলেছে টোকিয়োয় একাধিক পদকজয়ীর পুরনো টুইট।
২০১৯ সালের জুনে করা এক টুইটে এবার অলিম্পিক্সে কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জেতা বজরং পুনিয়া মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে এশিয়ান গেমসে সোনা জেতার জন্য তাঁকে তিন কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ। ওই টুইটে পুনিয়ার প্রশ্ন ছিল, ‘যদি আপনারা কথা রাখতেই না পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে খেলোয়াড়রা আর কী প্রত্যাশা রাখবে?’ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই বার্তা রি-টুইট করেছিলেন টোকিয়োয় দেশকে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে প্রথম সোনা এনে দেওয়া নীরজও। বলেছিলেন, ‘কথা রাখুন। যাতে আমরা টাকার চিন্তা ঝেড়ে ফেলে অলিম্পিক্সের প্রস্তুতিতে মন দিতে পারি।’