বেঙ্গল লাইনের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিল ইয়েচুরি লাইন। আর তাতে আপাতত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল বাংলার সিপিআইএম নেতারা। কয়েকদিন আগেই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন, বিজেপি বিরোধিতায় সর্বভারতীয় স্তরে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী এবং কচ্ছ থেকে কোহিমা পর্যন্ত যে কোনও দলের সঙ্গে কাজ করতে আমরা রাজি। আর এবার কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক শেষে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপিকে রুখতে কোনও দলের প্রতি অস্পৃশ্যতা রাখতে চায় না সিপিআইএম বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে৷
তবে তাঁরা স্বীকার করে নিয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ তৃণমূলের উপর বেশি আস্থা রেখেছে। পাশাপাশি বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসকে এক–আসনে বসানোটা সম্পূর্ণ ভুল হয়েছে। অর্থাৎ বিজেমূল তথ্য ফেল করেছে। তাই বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে থেকে তাঁরা লড়াই করতে রাজি। তহে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজ্যস্তরে লড়াই জারি থাকবে।
এই বিষয়ে সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলায় প্রাপ্তি বিজেপির পরাজয়৷ বাংলা দখলে এবার বিজেপি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল। হাই–প্রোফাইল প্রচারও করেছে৷ তবে হিন্দুত্ববাদের আদর্শ এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছেন৷ যা বাংলার সংস্কৃতির উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল৷ বিজেপিকে পরাজিত করতে মানুষ বিকল্প হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসকেই বেছে নিয়েছে৷ বাম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ–এর জোটকে বেছে নেয়নি৷ বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে মেরুকরণের লড়াইয়ে আমরা ছিটকে গিয়েছি৷ দল হিসেবে সিপিআইএমের কাছে এটা বিপর্যয়৷ ১৯৪৬ সালের পর বঙ্গের বিধানসভায় কোনও কমিউনিস্ট জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হননি৷ এটা নজিরবিহীন৷’
এবার বিজেপিকে পরাজিত করতে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে থেকে লড়াইয়ের পাশাপাশি আরও দুটি ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলকে সমর্থন করেছে সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটি৷ এই নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘অবিলম্বে রাজ্যে উপনির্বাচন করা উচিত৷ যেভাবে উপনির্বাচন না হওয়ার কারণে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করানো হয়েছে, তার নেপথ্যে অন্য খেলা থাকতে পারে৷ ত্রিপুরায় আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে৷ ভবিষ্যতে সব নির্বাচনেই বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী লড়াইকে শক্তিশালী করতে আমরা অসাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে জোট বাঁধব৷’