শুক্রবার রাত থেকেই তুমুল আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাণিজ্যনগরীতে। একটা ভুয়ো ফোন পেয়ে রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ফোনের ওপার থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি হুমকি দিয়ে বলেছে বিগ বি-র বাড়িতে বোমা রাখা আছে। বিস্ফোরণ হতে পারে যে কোনও সময়। মুম্বইয়ের আরও তিন ব্যস্ততম রেলস্টেশনেও ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষা হয়েছে বলেও শাসানি দেয় সেই ব্যক্তি। এরপরেই হইচই শুরু হয়ে যায় পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়ে যায় তল্লাশি অভিযান। পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও বহুবার এমন হুমকি ফোন এসেছিল।
মুম্বইয়ের একাধিক জনবহুল এলাকায় বিস্ফোরণ হতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাই সতর্কতা কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। উড়ো ফোনে জানানো হয়, জুহুতে অমিতাভের বাংলোতে বোমা রাখা হয়েছে। মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, বাইকুল্লা ও দাদার রেলওয়ে স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণ হবে। এই ফোন পাওয়ার পরেই তড়িঘড়ি উল্লিখিত জায়গাগুলিতে ছুটে যায় পুলিশ, জিআরপি ও বম্ব স্কোয়াড। যদি বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি, তবে প্রতিটি জায়গায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কয়েকগুণ।
ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ভয়ঙ্কর স্মৃতি আছে মুম্বইয়ে। ১৯৯৩ সালের মার্চে মুম্বই শহরের ১৩টি জায়গায় পর পর ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে প্রাণ যায় ২৫৭ জনের, আহত হন সাতশোরও বেশি। নরিম্যান পয়েন্ট, দালাল স্ট্রিট, দাদার, বান্দ্রা, সান্তাক্রুজ, পারেল— বেছে বেছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ, এয়ার ইন্ডিয়া ভবন, ভিক্টোরিয়া টার্মিনাস এমনকী শিবাজি পার্ক, জাভেরি বাজার-সহ বেশ কয়েকটি অভিজাত হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিস্ফোরণের জেরে। মুম্বইয়ের এই এলাকাগুলো বরাবরই আততায়ীর নিশানায় আছে। তাই ভুয়ো ফোন হলেও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।
মুম্বইয়ের প্রতিটি ব্যস্ততম এলাকায় তল্লাশি চলছে বলে জানা গেছে। কড়া পাহাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে রেল স্টেশন ও বিমানবন্দরে। এর আগেও মুম্বইয়ের রেল স্টেশনগুলিতে বিস্ফোরণের হুমকি দিয়ে ফোন এসেছিল। গত মে মাসে মুম্বইয়ের মহারাষ্ট্র সচিবালয়ে বোমা রাখার ভুয়ো ফোন এসেছিল। পরে দেখা যায় ফোনটি এসেছে নাগপুর থেকে। গতকালের ফোন কে করেছিল বা কোথা থেকে এসেছিল তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। এখনও অবধি দুজনকে আটক করা হয়েছে।