ঝাড়খন্ডের বিচারকের মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। শীর্ষ আদালত এদিন সিবিআই-কে নোটিস জারি করেছে এই মামলায়। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ বিচারকদের হুমকি দেওয়ার ক্ষেত্রে সিবিআই বা কোনও তদন্তকারীই ঠিক মতো প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না। এই সপ্তাহের শুরুতেই ধানবাদে বিচারকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তভার পেয়েছে সিবিআই। অভিযোগ, অতিরিক্ত জেলা বিচারক উত্তম আনন্দকে ইচ্ছাকৃত গাড়ি চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট এদিন সিবিআইকে প্রশ্ন করে, বিচারকদের বিভিন্ন সময় যে হুমকি দেওয়া হয় সেই ঘটনার ক্ষেত্রে সিবিআই কী পদক্ষেপ করেছে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এদিন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালকে বলেছে, এই ধরনের একাধিক ঘটনায় গ্যাংস্টার ও প্রভাবশালীরা জড়িত। বিচারকদের হুমকি এবং অশালীন মন্তব্য করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, ‘দেশে এমন বহু ঘটনা রয়েছে যেখানে গ্যাংস্টার ও হাই প্রোফাইল ব্যক্তিরা জড়িত। হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেজে বিচারকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ জানালেও সিবিআই কিছুই করছে না। সিবিআইয়ের স্বভাবে কোনও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।’
অভিযোগ জানানোর পরও বিচারকদের কোনও স্বাধীনতা থাকছে না বলে মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। আইনের রক্ষাকর্তাদের পুলিশ বা সিবিআই কেউই কোনও সাহায্য করছে না। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এদিন বলেছেন, ‘দেশে নতুন একটি ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। যখনই নজিরবিহীন কোনও নির্দেশ শোনানো হচ্ছে, তখনই আইনকে অপমান করা হচ্ছে। বিচারকরা অভিযোগ দায়ের করার পরও পুলিশ বা সিবিআই কোনও প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না। বিচার বিভাগকে পুলিশ বা সিবিআই কেউই সাহায্য করছে না।’
ঝাড়খন্ডের বিচারকের মৃত্যু রাজ্যের চরম ব্যর্থতা বলে এদিন মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। সেখানে স্থানীয় কোল মাফিয়ারা রয়েছে। সমাজ ও বিচারকদের উপযুক্ত নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। আগামী ৯ অগস্ট ফের এই মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত। গত মাসের শেষের দিকে গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ঝাড়খন্ডের অতিরিক্ত জেলা বিচারক উত্তম আনন্দের। ধানবাদের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল তাঁর দেহ। প্রথম থেকে এই ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার হওয়ার পর এই ঘটনাকে খুন বলেই মনে করছে পুলিশ। কারণ, ফুটেজে পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, একটি টেম্পো ইচ্ছাকৃতভাবেই প্রাতঃভ্রমণে ব্যস্ত বিচারককে চাপা দিয়ে চলে যাচ্ছে।