একুশের ভোটযুদ্ধে বিজেপিকে রুখে দিয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। এবার তাদের পাখির চোখ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। আর সেই লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে অন্যান্য রাজ্যের সংগঠন বৃদ্ধির চেষ্টা। এবার যেমন আসামের সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের নেতাকে দলে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে তৃণমূল। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে সংগঠন বিস্তার করতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা নিয়ে ময়দানে নেমেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ত্রিপুরা সফরে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এর পর তৃণমূল নেতৃত্ব নজর দিচ্ছেন আসামের দিকে।
সূত্রের খবর, অসমের শিবসাগরের বিধায়ক তথা রাজৌর দলের নেতা অখিল গগৈকে দলে যোগদানে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের তরফে। সূত্রের খবর, রাজৌর দলের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই দু’বার কলকাতায় এসে কালীঘাটের দফতরে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। সেই বৈঠকে প্রথমে তাঁদের সরাসরি তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিকল্প পথ হিসেবে দলের সরাসরি যোগ না দিলেও অসমে জোট গড়ে ভোটের লড়াইয়ে প্রস্তাব রয়েছে। অসমের রাজনীতিতে অখিল পরিচিত নাম। মধ্য চল্লিশের অখিল গত দু’দশক ধরে সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। ‘ইন্ডিয়া এগেনস্ট করাপশন’ সংগঠনকে সামনে রেখে ভারতীয় রাজনীতিতে দুর্নীতি রুখতে অসমে ব্যাপক আন্দোলন করেছিলেন তিনি। ওই রাজ্যের কৃষকদের দাবি আদায়ের জন্য ‘কৃষক মুক্তিসংগ্রাম সমিতি’ গড়েও সরব হয়েছিলেন। এছাড়াও, তথ্যের অধিকার আইন নিয়েও উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে তাঁর।
আসামের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর আত্মপ্রকাশ ২০১৯ সালে মোদী সরকারের আনা নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরোধী আন্দোলন করে। সেই আন্দোলনের জেরে কারাবাসও করতে হয়েছিল তাঁর। ২০২১ সালে অসমের বিধানসভা নির্বাচনে রাজৌর দলের হয়ে বেশকিছু প্রার্থীও দিয়েছিলেন অখিল। শিবসাগর কেন্দ্র থেকে নিজে জিতলেও বাকি কোনও কেন্দ্রে তাঁর দলের কোনও প্রার্থী জয়লাভ করেননি। তবে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের যে কলকাতায় দু’দফায় বৈঠক হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন রজৌর দলে অখিল-ঘনিষ্ঠ নেতা অম্লানজ্যোতি গগৈ। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিকই যে, বাংলার শাসকদল তৃণমূল আমাদের তাদের দলে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কলকাতায় দু’বার আমাদের সঙ্গে তাদের বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু এখনও কিছুই চূড়ান্ত নয়। আলাপ-আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে অবশ্যই তা প্রকাশ্যে জানানো হবে।’