বাংলার বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ নিয়ে ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয় তাঁর। রাজ্যের এই পরিস্থিতির জন্য ফোনালাপে ডিভিসিকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একে ‘ম্যান মেড’ বন্যা বলেও নালিশ করেছেন তিনি। মমতার সেই অভিযোগকেই কার্যত মান্যতা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে করা টুইট অন্তত তেমনটাই বলছে।
পিএমও-র তরফে করা টুইটে বলা হয়েছে, ‘জলাধার থেকে জল ছাড়ার দরুন বাংলার কিছু জায়গায় হওয়া বন্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে সমস্তরকম সাহায্য করা হবে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য প্রার্থনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী’। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এই টুইট থেকে স্পষ্ট যে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। ঠিক কী অভিযোগ করেছিলেন মমতা?
ফোনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি অভিযোগ জানান মুখ্যমন্ত্রী। একে ‘ম্যান মেড’ বন্যা বলে দাবি করেন। বলেন, ‘ডিভিসি জলাধারেরর পলি পরিষ্কার করা হয় না’। পরিষ্কার থাকলে অতিরিক্ত জল ধরে রাখা সম্ভব হত বলে মোদির কাছে সরাসরি অভিযোগ জানান মমতা। তিনি আরও বলেন, ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়বে বলে ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই কারণেই প্লাবিত বহু এলাকা। তাঁর সেই অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী কার্যত সিলমোহর দিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত চলছিল। অধিকাংশ সময়ই দেখা গিয়েছে, রাজ্যের অভিযোগ মানেনি কেন্দ্র। কিংবা কেন্দ্রের দাবিকে খারিজ করেছে রাজ্য। এবার একেবারে উলটোচিত্র। কেন্দ্রের নেতৃত্বাধীন ডিভিসির বিরুদ্ধে ওঠা অতিরিক্ত জলছাড়ার অভিযোগ মেনে নিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। যা দেখে মনে করা হচ্ছে, এবার হয়তো বাংলার সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাতে ইতি পড়ল। কেন্দ্র ও রাজ্য সম্মিলিতভাবে বাংলার বন্যা দুর্গত মানুষের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হবে, আপাতত এই আশাতেই বুক বাঁধছে রাজ্যের মানুষ।