গত সপ্তাহের নিম্নচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে ভিজেছিল বাংলা। তার ফলে ফুঁসছে নদী। জলস্তর বাড়ায় জল ছাড়ে ডিভিসি আর তার ফলে প্লাবিত হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে সড়কপথে আমতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমতার শেহাগরি এলাকাতেই প্রথম যান তিনি। হাঁটু জলে নেমে প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বলে আগেই স্থির হয়েছিল। আকাশপথে তিন জেলার প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনের কথা ছিল তাঁর। তবে বাদ সাধল আবহাওয়া। বুধবার সকাল থেকে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যজুড়ে চলছে প্রবল বৃষ্টি। তার ফলে খানাকুলে হেলিকপ্টার অবতরণে তৈরি হয় জটিলতা। কার্যত বাধ্য হয়েই আকাশপথে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। সড়কপথে আমতার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন তিনি। আমতায় পৌঁছনোর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় তাঁর। ফোনালাপে ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলেই অভিযোগ করেন তিনি। আমতার শেহাগরিতে পৌঁছে ছাতা মাথায় জমা জলে দাঁড়িয়েই কথা বলেন প্লাবন দুর্গতদের সঙ্গে। শোনেন প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ। ত্রাণসামগ্রীর কোনও অভাব হবে না বলেই আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর। ডিভিসি’র ছাড়া জলেই উদয়নারায়ণপুরের এমন জলছবি বলেই জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসিকে আর জল না ছাড়ার অনুরোধও করেন তিনি।
এদিকে, এখনও পর্যন্ত আমতা এবং উদয়নারায়ণপুরের পরিস্থিতি যথেষ্ট ঘোরাল। আমতার ২ নম্বর ব্লকের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পুরোপুরি প্লাবিত। বুধবার আবারও দু’টি পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। রূপনারায়ণ, মুণ্ডেশ্বরীর জলে দীপাঞ্চলের অবস্থাও অত্যন্ত সঙ্গীণ। পাশাপাশি উদয়নারায়ণপুরেরও সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা আংশিক প্লাবিত। প্লাবিত এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। প্লাবিতদের যাতে খাবার ও পানীয় জলের কোনও অভাব না হয়, জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের সেদিকে খেয়াল রাখার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।