গত বছরের অক্টোবর থেকেই দিল্লী সীমান্তে কেন্দ্রের নয়া ৩ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে দেশের অন্নদাতারা। এবার উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় এবার তাঁবুর খুঁটি পুঁততে শুরু করেছেন নতুন তিনটি কৃষি আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামা কৃষকেরা। লক্ষ্য, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কৃষকদের ক্ষোভকে জনতার মধ্যে সঞ্চারিত করে যোগী আদিত্যনাথ তথা বিজেপিকে ধাক্কা দেওয়া।
উত্তরপ্রদেশের কৃষক ফ্রন্টকে নেতৃত্ব দেবেন ভারতীয় কিষাণ মোর্চার প্রধান রাকেশ টিকায়েত নিজেই। গত মাসের শেষে লখনউয়ে মোর্চার পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, টিকায়েতের নিজের রাজ্য উত্তরপ্রদেশের গ্রামে গ্রামে এই আন্দোলন জোরদার করা হবে। টিকায়েতের কথায়, ‘আমরা ৫ আগস্ট থেকে মহাপঞ্চায়েত শুরু করব।’
আন্দোলনের আর এক নেতা যোগেন্দ্র যাদবের কথায়, ‘উত্তরপ্রদেশের সরকার কথা দিয়েছিল, ধান এবং গমের প্রত্যেকটি দানা কিনবে। কিন্তু ষোলই জুলাইয়ের পর থেকে আর হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না! রাজ্যে উৎপন্ন হয় প্রায় তিন কোটি টন গম। কিন্তু মাত্র বাষট্টি লাখ টন গম কিনেছে সরকার, যা মোট উৎপাদনের ১৮ শতাংশ মাত্র।’
সূত্রের খবর, লখনউয়ে স্থায়ী প্রতিবাদী মঞ্চ গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জুড়ে আন্দোলন হবে। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এই কৃষক আন্দোলন উত্তরপ্রদেশের জাতপাতের সমীকরণে কী ভাবে প্রভাব ফেলে, সে ব্যাপারে সতর্ক নজর রাখছে সরকার এবং বিরোধী দল— উভয় পক্ষই।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী খাপ বালিয়ানের প্রতিনিধিত্ব করেন টিকায়েত। ২০১৪ ও ২০১৯-এর লোকসভা ভোট এবং ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে এই খাপ ঢেলে ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ২০২২-এর বিধানসভা ভোটে কৃষক ক্ষোভের মুখে এই ভোটব্যাঙ্ক বিজেপি ধরে রাখতে পারবে কি?
ইতিমধ্যেই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বেশ কিছু মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করেছে মোর্চা। আখ-বলয়ের ভূখণ্ডে অনুষ্ঠিত এই মহাপঞ্চায়েতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে এসপি এবং আরএলডি-র নেতা ও কর্মীদের। মুজফফরনগর, বিজনৌর, বাগপেট ও মথুরার মহাপঞ্চায়েতে যথেষ্ট ভিড় দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী এই সব জমায়েতে।