ত্রিপুরায় আঁটঘাঁট নেমে ‘খেলতে’ নামছে তৃণমূল। আইপ্যাক বিতর্ক কাটতে না কাটতেই সোমবার আগরতলায় পা রাখছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী, তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েনরা একেবারে মাঠে নেমে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। বিজেপি অবশ্য শুরু থেকেই তৃণমূলকে কটাক্ষ করছে তাঁদের সংগঠনের সিকিভাগও ত্রিপুরায় নেই বলে। কিন্তু উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের রাজনৈতিক মহল বলতে শুরু করেছে, ‘খেলা’ ঘোরাচ্ছে তৃণমূল। আর ক্রমেই বিরোধী পরিসর বাম বা কংগ্রেসের থেকে নিজেদের দিকে টেনে নিচ্ছে তাঁরা। আর তা করতে গিয়ে কংগ্রেস ও বামেদের ঘর ভাঙাচ্ছে তাঁরা। তাতে সাফল্যও মিলছে। এমনকী সুবল ভৌমিকদের যোগদানের পর ত্রিপুরায় কংগ্রেসের বহু হেভিওয়েট নেতাই তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে খবর। পরিস্থিতি এমনই যে কংগ্রেসের ভিত্তি ধরে রাখতে ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পীযূষ বিশ্বাসকে ফোন করে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন সোনিয়া গান্ধীর ঘনিষ্ঠ নেতা বেনুগোপাল।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, তৃণমূলের নির্বাচনী উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক-এর ২৩ জন আধিকারিককে হাউজ অ্যারেস্ট করে রাখার পর তাঁদের ছাড়াতে আদালতে সওয়াল করেন ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পীযূষ বিশ্বাস। মামলায় মহামারী আইন ভাঙতে পারেন এই যুক্তিতে জামিন দেওয়ার বিরোধিতা করেন সরকারি পক্ষের উকিল। যদিও সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। আইনজীবীর দায়িত্ব নেওয়া ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস নেতা পীযূষ বিশ্বাস স্পষ্টই জানান, ‘গৃহবন্দী করে অনর্থক হয়রানি করা হচ্ছিল এই প্রতিনিধি দলটিকে’। এরপরই আই প্যাকের কর্মীদের জামিন মেলে।
কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনের জন্য সওয়াল করছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, এই ঘটনাতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে ত্রিপুরায়। তবে, কি কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের ‘হিসেবনিকেশ’ হয়ে যাচ্ছে তলেতলে? বেনুগোপালের জিজ্ঞাসায় অবশ্য পীযূষ বিশ্বাস কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের দিকেই আঙুল তুলেছেন বলে খবর। কেন ত্রিপুরায় এখন তৃণমূলকে নিয়ে আলোড়ন চলছে, তার জবাবে পীযূষ জানিয়েছেন, যে আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে তৃণমূল ত্রিপুরায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তার সিকিভাগ চেষ্টাও কংগ্রেস করছে না।