দিনের পর দিন করোনার ঢেউ যেন বেড়েই চলেছে। সেই আতঙ্কের মধ্যেই করোনার ডেল্টা প্রজাতি এখন ঘুম উড়িয়েছে সকলের। সবচেয়ে বেশি সংক্রামক এই প্রজাতিকে ঠেকাতে একের পর এক কোভিড গাইডলাইন জারি করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। দেশের যে ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ডেল্টা প্রজাতির স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল পশ্চিমবঙ্গ। গোটা দেশে চতুর্থ স্থানে রয়েছে এ রাজ্য।
চিন্তা বাড়িয়ে এবার পূর্ব মেদিনীপুরে ঢুকে পড়েছে কোভিডের ডেল্টা স্ট্রেন। কোভিড পজিটিভ কয়েকজন রোগীর নমুনায় ডেল্টা স্ট্রেনের হদিশ পেয়ে উদ্বেগে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কোভিড বিধি আরও কড়াভাবে মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কোভিড আক্রান্ত কয়েকজনের নমুনায় ডেল্টা প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। আক্রান্তরা আর কতজনের সংস্পর্শে এসেছে তার খোঁজ চলছে।
স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, কোভিডের এই ডেল্টা প্রজাতি খুব দ্রুত ছড়াতে পারে। একবার যদি ‘হিউম্যান ট্রান্সমিশন’ শুরু হয়ে যায়, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। গোষ্ঠী সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যাবে। তাই সংক্রমিতদের হদিশ পেতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় কনট্যাক্ট ট্রেসিং শুরু হবে বলেও জানা গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যসচিব বিভাস রায় জানান, ডেল্টা প্রজাতি কোন কোন জেলায় ছড়িয়েছে তা জানতে জিনোম সিকুয়েন্স করা হচ্ছে। রাজ্যজুড়েই খোঁজ চলছে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। কোভিড বিধি আরও কড়া করতে হবে। ভিড়, জমায়েত একেবারেই বন্ধ থাকবে। মাস্ক বাধ্যতামূলক, পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। ঘন ঘন হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। সামান্য উপসর্গ দেখা গেলেই কোভিড টেস্ট করাতে হবে।
সংক্রমণের প্রশ্নে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনর্সান’ (ভিওসি) তালিকায় থাকা স্ট্রেনগুলির মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী ডেল্টা প্রজাতি। দেশে ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টিতেই (রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে) ভিওসি মিলেছে। এবং এর প্রতিটিতেই ডেল্টা হানা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আসা মাত্র চার জনের শরীরে ওই নমুনা পাওয়া গিয়েছে। বাকি যে ১,৩৯৪ জনের শরীরে ওই নমুনা মিলেছে, তাঁরা সকলেই এ রাজ্যের বাসিন্দা। স্বাস্থ্যকর্তাদের ব্যাখ্যা, এটি যেমন অন্যদের তুলনায় বেশি সংক্রামক, তেমনই এদের হামলায় ফুসফুসের অনেক বেশি ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তাই অনেক বেশি সতর্ক থাকা দরকার।