মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিজেপি বিরোধী দলগুলির নেতাদের নিয়ে আপাতত কোনও বড় সম্মেলন নাও করতে পারেন। তিনি আগে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলির নেতাদের সঙ্গে একান্তে কথোপকথনেই জোর দিতে চাইছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। চলতি দিল্লী সফরে তাঁর বিজেপি বিরোধী নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বড় একটা বৈঠক করার কথা ছিল দিল্লীর বঙ্গ ভবনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি একান্ত বৈঠকেই জোর দেন।
গতকাল ঘরোয়া আলোচনায় দলীয় নেতাদের মমতা স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, আপাতত ‘ওয়ান ইজ টু ওয়ান’ কথাতেই মনোনিবেশ করবেন তিনি। গতকালই সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দশ জনপথে গিয়ে কথা বলেছিলেন মমতা। তারপর বিকেলে দেখা করেছিলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও। শুধু তাই নয় এই সময়ে দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে বর্ষীয়ান নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে চারটি দল সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না মমতা। সেই চার দলের নেতাদের সঙ্গেও অন্য আঙ্গিকে কথাবার্তা চালাতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁরা হলেন নবীন পট্টনায়েক, অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। তা ছাড়া তামিলনাড়ুর এআইডিএমকে-এর বিষয়টিও বিবেচনার মধ্যে রাখছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
এই তিন চারটি দলের সঙ্গে কী কী বিষয়ে মমতা আলোচনা করবেন তাও একপ্রকার চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। জানা গিয়েছে, মমতা মূলত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যগুলির প্রতি বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিষয়ে জোর দেবেন। তাঁর মধ্যে প্রথম হল জিএসটি।
এর পাশাপাশি ভ্যাকসিন ও পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয় নিয়েও এই রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করতে চান মমতা। অনেকের মতে, মমতা যতই মুখে বলুন তিনি লিডার নন, ক্যাডার। আসলে বিজেপি বিরোধী মঞ্চকে ঐক্যবদ্ধ করতে তিনিই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নিতে চাইছেন। তাঁর পরিকল্পনা, দৌত্যই তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।
নতুন কর ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগেই অনেক বিরোধী শাসিত রাজ্য বলেছিল, এই সিস্টেমে রাজ্যগুলিকে ব্যপক রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। সেই সময়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, রাজ্যগুলির সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেবে কেন্দ্র। রাজ্যগুলির অভিযোগ, এখন সেই কথা রাখছে না দিল্লী। মূলত এই বিষয়টি নবীন, জগনমোহনদের সঙ্গে কথা বলবেন মমতা।