ফের বড়বড় ভাঙন গেরুয়াশিবিরে। “বিজেপিতে থেকে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করা যাচ্ছে না, শুধুই জাতপাত আর বিভেদের রাজনীতি করে বিজেপি। হিংসা আর উস্কানিমূলক রাজনীতি চাই না।” এমনই অভিযোগ তুলে, রায়গঞ্জের বরুয়া গ্রামের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থের কথা বলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন নির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যরা। ফলত বিজেপির দখলে থাকা রায়গঞ্জ ব্লকের বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের ক্ষমতা এল তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে। পাশাপাশি বাম-কংগ্রেস জোট ছেড়েও একঝাঁক কর্মী-সমর্থক হাতে তুলে নেন ঘাসফুল-পতাকা।
এদিন দলত্যাগী বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস পঞ্চায়েত সদস্যদের তৃণমূল কংগ্রেসে স্বাগত জানালেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সবুজ আবীরে রাঙিয়ে বরণ করে নেওয়া হল তাঁদের। বিপদে আপদে সর্বদা গ্রামের মানুষের পাশে থেকে কাজ করার অঙ্গীকার নিলেন সদ্য বিজেপি ও সিপিএম কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানকারী পঞ্চায়েত সদস্য ও বাম-কংগ্রেস জোট সদস্যরা। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে রায়গঞ্জ ব্লকের ১২ নম্বর বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের দখল নিয়েছিল বিজেপি। মোট ২৭ সদস্যের পঞ্চায়েতে বিজেপি পেয়েছিল ১১ টি আসন, তৃণমূল কংগ্রেস ১২ টি এবং সিপিএম-কংগ্রেস জোট পেয়েছিল ৪ টি আসন। বিজেপির ১১ জন এবং বাম-কংগ্রেস জোটের ৪ জন সদস্য মিলে বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের দখল নেয় বিজেপি। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস।
ভোটের ফলাফলের পর থেকেই একে একে বিজেপির দখলে থাকা গ্রামপঞ্চায়েত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে থাকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে শামিল হতে বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস সদস্যরা দলে দলে তৃণমূলে নাম লেখাতে শুরু করে। এদিন রায়গঞ্জ ব্লকের বিজেপি পরিচালিত ১২ নং বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির ৩ জন এবং জোটের ৪ জন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের পক্ষে ভোট দিয়ে বিজেপি বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা পাশ করিয়ে নেয়। এরফলে বর্তমানে ১২ নং বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের ২৭ জন সদস্যের মধ্যে তৃণমূলের দাঁড়ালো ১৯ জন, এবং বিজেপির ৮ জন। অনায়াসেই বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের বোর্ড দখল করল তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক দলে যোগদানকারী দলত্যাগী বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস সদস্যদের অভিযোগ, বিজেপিতে হিংসা আর উস্কানিমূলক রাজনীতি এবং চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ফলে বিজেপির দখলে থাকা বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের সাধারণ মানুষের কোনও উন্নয়নমূলক কাজই হচ্ছিল না। অনাস্থা এনে গ্রামের সাধারণ উন্নয়ন ও পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁরা। রায়গঞ্জ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মানস ঘোষ জানিয়েছেন, “বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর দলে দলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করছেন। গ্রামের মানুষের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে বিজেপি ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শামিল হতেই পঞ্চায়েতের বোর্ড পরিবর্তন করলেন বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্যরা।”