রাজ্যের সীমানা নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনেরই। কিন্তু রবিবার থেকেই উত্তেজনা চরমে উঠেছে অসম-মিজোরাম সীমানায়। সংঘর্ষের দু’দিন পরেও টানটান উত্তেজনা বজায় আছে। দুই রাজ্যের মধ্যে সংযোগকারী জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ চলছে বলে জানা গিয়েছে। ক্রমাগত সংঘর্ষের জন্য দুই রাজ্যের তরফেই একে অপরকে দোষারোপ করা হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদন শুনেই বুধবার অসম ও মিজোরামের মুখ্যসচিবদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা।
রবিবার রাতে অসম-মিজোরাম সীমানাবর্তী গ্রামের আটটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। এরপরই সোমবার সকাল থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দফায় দফায় দুই রাজ্যের বাসিন্দা ও পরে পুলিশদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সোমবার ৬ ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে অসম পুলিশের ৬ কর্মীর মৃত্যু হয়। এ দিন আরও এক পুলিশকর্মীর মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ৭-এ পৌঁছেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ কর্মী মিলিয়ে আহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা টুইটে একে অপরকে আক্রমণ করতে থাকেন।
একদিকে, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা টু্ইটে লেখেন, সংঘর্ষ বন্ধ হওয়া উচিৎ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বিষয়টিতে দৃষ্টিপাত করার অনুরোধও জানান তিনি। তাঁর দাবি, দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন নিরপরাধ মানুষ। অন্যদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও টুইটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আর্জি জানান। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীকে টুইটে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, “মিজোরামের পুলিশ সুপার আমাদের পোস্ট থেকে লোক সরাতে বলছে, নাহলে অশান্তি থামবে না। এ ভাবে কি করে সরকার চালানো সম্ভব?” সেই টুইটের জবাবে জোরামথাঙ্গা লেখেন, “মিজোরামে সাধারণ মানুষকে লাঠিপেটা করছে অসম পুলিশই।”
বিভিন্ন এলাকায় অসমের রাস্তা ও জঙ্গল নষ্ট করার অভিযোগও তোলা হয়েছে মিজোরাম পুলিশের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, মিজোরামের দাবি, অসম পুলিশ সিআরপিএফ পোস্ট অতিক্রম করে জোর খাটিয়ে তাদের রাজ্যে প্রবেশ করে। মিজোরাম সরকারের দাবি, কোনোভাবেই আলোচনায় রাজি নয় অসম। তাদের পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুঁড়েছে অসম পুলিশই।
দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে অশান্তি ও উত্তপ্ত পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই সীমানা আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষ যাতে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে সীমানায় টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরই মাঝে আজ বিকেল চারটেয় দুই রাজ্যের মুখ্য সচিব ও পুলিশের ডিজিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা।