পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রায় ২ বছর আগে হোয়াটস অ্যাপ ও খবর জানানোর পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশজুড়ে। গত সপ্তাহে ফের সামনে চলে আসে পেগাসাস কেলেঙ্কারির কথা৷ এভার জানা গেল, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসার, একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা, নীতি আয়োগ, ইডি অফিসারদের ফোনেও আড়ি পেতেছিল পেগাসাস স্পাইওয়্যার! সন্দেহজনক সেই তালিকায় নাকি এমন অফিসারদেরও নাম পাওয়া গেছে। সংবাদমাধ্যমের দাবি, ১৭টি আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সেই সন্দেহজনক ডেটাবেস খতিয়ে দেখে। তার থেকেই এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। এখানেই শেষ নয়। অনুমান করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী দফতরের আধিকারিকদের ফোনেও ফাঁদ পাতা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহ থেকেই পেগাসাস কাণ্ডে রাজধানীর রাজনীতি সরগরম। মোদী সরকার আড়ি পাতার নির্দেশ দিয়েছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কারণ ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও আগেই জানিয়েছে, তারা শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশের সরকারকেই তাদের পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিক্রি করেছিল। বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাই এই স্পাইওয়্যার কাজে লাগিয়ে ফোনে আড়ি পেতে থাকে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রসচিবের অনুমতি ছাড়া আড়ি পাতা যায় না। কারণ এই স্পাইওয়্যার কেনার ও ইনস্টল করার খরচ যেমন বিশাল, তেমনি একে ব্যবহার করতে হলে আইটি আইন মাফিক সরকারি অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয়। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, মোদী সরকার কি নিজেই এই স্পাইওয়্যার কিনে ফোনে আড়ি পাতার দিয়েছিল!
উল্লেখ্য, ফোনে আড়ি পাতার বিষয়টা প্রথম সামনে আসে যখন একটি ডেটাবেস লিক হয়ে যায়। তাতেই সরকার ও বিরোধী পক্ষের একাধিক নেতামন্ত্রী, সাংবাদিক, আমলা, মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী, শিল্পপতি সহ প্রায় ৩০০ জনের ফোন নম্বর লেখা ছিল। এর থেকেই সন্দেহ জাগে তাহলে কি এইসব নম্বর হ্যাক করে ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। এদিকে, দেশের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইং (র)-এর অ্যাকাডেমিতে অফিসারদের ফোনে স্পাইওয়্যার ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলেও খবর সামনে আসে। কর্নেল মুকুল দেব ও কর্নেল অমিত কুমার নামে দুই সেনা অফিসারের ফোন নম্বরও রয়েছে সেই ডেটাবেসে। উচ্চপদস্থ ইডি অফিসার রাজেশ্বর সিং যিনি হাই-প্রোফাইল তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁর ফোন নম্বরও রয়েছে ডেটাবেসে। এর থেকেই অনুমান দেশের সেনা ও গোয়েন্দা অফিসাররাও স্পাইওয়্যারের নিশানায় রয়েছেন।