এ যেন মগের মুলুক! গত বছর থেকেই বিতর্ক চলছিল পতঞ্জলির তৈরি যে ওষুধ নিয়ে, এবার সেই বিতর্কিত ‘করোনিল’কে করোনা চিকিৎসার সহযোগী ওষুধ হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র দিল উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার! শুক্রবার লোকসভায় এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীন পাওয়ার। পতঞ্জলি এই ওষুধ কোভিড নিরাময় করবে বলে যে দাবি তুলেছিল, সেই দাবি বাদ রেখেই এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, আয়ুষ মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আর কমিটির পরামর্শ মেনে এই ‘করোনিল’ ওষুধকে করোনা চিকিৎসার সহায়ক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
এক লিখিত বিবৃতিতে মন্ত্রী জানিয়েছেন, আয়ুষ মন্ত্রকের পর্যালোচনা কমিটি পতঞ্জলি গবেষণা ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের এই ওষুধটিকে ‘ইমিউনিটি বুস্টার’ বলে উল্লেখ করেছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আইটিআরসি রিপোর্ট পর্যালোচনা করার পরই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এই ওষুধকে কোভিডের সহায়ক হিসেবে ব্যবহারের জন্য। ড্রাগস এবং কসমেটিকস আইন- এর অধীনে আয়ুর্বেদিক, সিদ্ধ, ইউনানী ও হোমিওপ্যাথির ওষুধের লাইসেন্স প্রদান ও অনুমোদনের কাজটি করা হয়েছে। ওষুধের সায়েন্টিক রিপোর্ট আগেই প্রকাশিত হয়েছিল, তবে এখনও করোনিলকে অনুমোদন দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
চলতি বছরের শুরুতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং নীতিন গাডকরির উপস্থিতিতে করোনিলের ‘বিজ্ঞানসম্মত গবেষণাপত্র’ প্রকাশ করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে পতঞ্জলির তৈরি ওষুধ নিয়ে ক্যামেরার সামনে ধরাও দিয়েছিলেন তাঁরা। রামদেব জানিয়েছিলেন, হু-র কাছ থেকেও ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। এমনকি ব্যানারেও পরিষ্কার ভাষায় লেখা ছিল, করোনিল হু-র কাছ থেকে ওষুধজাতীয় পণ্যের শংসাপত্র পেয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই রামদেবের এই ঘোষণায় বিতর্ক শুরু হয়। হু-এর তরফেও নাম না করে জানিয়ে দেওয়া হয় তারা করোনার কোনও ওষুধকে ছাড়পত্র দেয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছাড়পত্র পাওয়ার মিথ্যা দাবি করে কী ভাবে মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে ওষুধ প্রকাশ করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন চিকিৎসকরা।