রীতিমতো অশান্ত লাল-হলুদ ভক্তকুল। চারদিকে বিক্ষোভ। সর্বোপরি ফুটবল থেকে দূরে থাকার আশঙ্কা। দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ লাল-হলুদ সমর্থকদের উদ্বেগ, ইস্টবেঙ্গল আদৌ এই মরশুমের আইএসএল-এ খেলবে তো? স্বাভাবিক ভাবেই দেশের অন্যতম সেরা ক্লাবের এহেন অন্ধকার সময়ে চুপ করে থাকতে পারেন না ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ কর্তারাও। অবশেষে ব্যাপারটা সমাধান করার জন্য এগিয়ে এসেছেন রিলায়েন্স কর্তারা। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, বুধবারই টার্মশিট এবং মূল চুক্তিপত্রর দুটো কপিই নিজেদের কাছে নিয়েছেন রিলায়েন্স কর্তারা। তাঁদের আইনজীবী দিয়ে পুরো ব্যাপারটা খুঁটিয়ে দেখে ইস্টবেঙ্গল এবং শ্রী সিমেন্ট সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তাঁরা। সূত্রটি বলছে, সমাধান সূত্র বের হতেও বোধ হয় খুব বেশিদিন লাগবে না। হয়তো দশ দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে, এই মরশুমে আইএসএল খেলবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে অবশ্য কেউই মুখ খুলতে রাজি নন।
উল্লেখ্য, এএফসি থেকে ফিফা, প্রত্যেকেই ক্লাব সমর্থকদের ভীষণভাবে গুরুত্ব দেয়। কারণ, সমর্থকদের জন্যই শেষ পর্যন্ত ফুটবল বেঁচে থাকে। তাই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের নিগ্রহ করার ঘটনা পৌঁছে গেছে এএফসি দফতরেও। এএফসি থেকে জানানো হয়েছে, তারা ব্যাপারটা ভালভাবে না দেখলেও, যতক্ষণ না ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এই ব্যাপারে তাদের কোনও রিপোর্ট দিচ্ছে, তারা কিছু করতে পারছে না। একে মাঠে দিন দিন ফুটবলের দর্শক কমছে। তার উপর বুধবার লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে, লাল-হলুদ সমর্থকদের যেভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে, তা ভালভাবে নিচ্ছেন না, ফেডারেশন এবং এফএসডিএল কর্তারা। শোনা যাচ্ছে, তারপরেই নাকি রিলায়েন্সের পক্ষ থেকে টার্মশিট আর চুক্তিপত্র দুটোই নেওয়া হয়েছে। ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্ট বলছে, টার্মশিটের সঙ্গে মূল চুক্তিপত্রের কোনও পার্থক্য নেই। আবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তারা বলছেন, টার্মশিটে যা ছিল, তা অনেক বদলে দেওয়া হয়েছে মূল চুক্তিপত্রে। যে কারণে, ক্লাব সই করতে পারছে না। কাদের বক্তব্য ঠিক, জানার জন্য টার্মশিট এবং চূড়ান্ত চুক্তিপত্র, দুটোই খতিয়ে দেখছেন এফএসডিএল কর্তারা। তাঁরা আশাবাদী দশ দিনের মধ্যেই পুরো জট খুলে যাবে। আর এসসি ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলতে পারবে।
তবে কোন শর্ত দিলে ক্লাব কর্তারা চুক্তিপত্রে সই করবেন, আর কোন শর্তে এসসি ইস্টবেঙ্গল খেলতে রাজি হয়ে যাবে, কেউই খুলে বলতে রাজি হচ্ছেন না। কর্তাদের বক্তব্য, যা হবে খুবই তাড়াতাড়ি। কারণ, এখনই ভাল দল গড়ার অবস্থায় আর নেই শ্রী সিমেন্ট কর্তারা। আরও দেরি হলে, এই মরশুমে আর দলটাও গড়তে পারবেন না তারা। তার উপর এএফসির লাইসেন্সিং প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ করতে হবে। নাহলে দল গড়েও ফুটবল খেলতে পারবে না এসসি ইস্টবেঙ্গল। তাই যা হবে, দশ দিনের মধ্যে। কিন্তু কীভাবে? কারা মধ্যস্ততা করে পুরো সমস্যাটা মেটাচ্ছেন? সে বিষয়ে এফসিএসডিএল কর্তারা আপাতত নীরব।