বিরাটিতে তৃণমূল কর্মী শুভ্রজিৎ দত্তকে গুলি করে খুনের ঘটনায় এবার ধরপাকড় শুরু করল পুলিশ। এই ঘটনায় ধৃত দিবাকরকে বৃহস্পতিবার নিমতা থানা এলাকা থেকে আটক করা হয়েছিল। রাতভর জেরার পর শুক্রবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দিবাকর বাবুলাল ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
জানা গিয়েছে, বণিক মোড়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে দিবাকরকে চিহ্নিত করে পুলিশ। রাতে তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু পুলিশ সূত্রে খবর, কথায় একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে দিবাকরের। ঘটনার সময়ে তিনি ওই এলাকায় কী করছিলেন, তাও স্পষ্ট করতে পারেননি। এদিকে, এলাকায় বাবুলাল ঘনিষ্ঠ দিবাকরের দিকে সন্দেহ রয়েছে মৃতের পরিবারেরও।
প্রসঙ্গত, বুধবার সন্ধেয় বিরাটির বণিক মোড়ে দলীয় কার্যালয়েই ছিলেন শুভ্রজিৎ। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় বাইকে চড়ে অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজন যুবক তাঁর পিছু নেয়। এরপর আচমকাই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কমপক্ষে পাঁচ রাউন্ড গুলি চলে এলাকায়। চারটি গুলি ওই তৃণমূল কর্মীর বুকে লাগে। একটি গুলি লাগে মাথায়।
এরপর ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন শুভ্রজিৎ। গুলির শব্দ পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে ভিড় জমান তাঁরা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ইতিমধ্যেই এলাকা ছাড়ে অভিযুক্ত যুবকেরা। খবর দেওয়া হয় নিমতা থানায়। বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। শুভ্রজিৎকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা জানান, ওই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
১ মিনিটের মধ্যে পাঁচটি গুলি চালিয়ে খুন করা সহজসাধ্য বিষয় নয়। তাই তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই খুনে কোনও পাকা খিলাড়িই জড়িত। কারণ এক মিনিটে পরপর পাঁচটা গুলি করেছে শুটার। অর্থাৎ কোনও শার্প শুটারকে দিয়ে খুন করানো হয়েছে শুভ্রজিৎকে। শার্প শুটারের পক্ষেই এটা সম্ভব বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
এদিকে, খুনের নেপথ্যে উঠে আসছে বিরাটির ত্রাস বাবুলালের নাম। তাঁর সঙ্গে একুশের দুপুরে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন শুভ্রজিৎ। হাতাহাতিতে মাথা ফাটে বাবুলালের, আর রাতেই খুন হন শুভ্রজিৎ। তাই খুনের মোটিভ হিসাবে বাবুলাল-তত্ত্বকেই খাঁড়া করে তদন্তে এগোচ্ছে পুলিশ। তৃণমূল নেতৃত্বেরও অভিযোগ, একাধিক জায়গায় অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে বাবুলালকে দেখা গিয়েছে। তাই বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে বাবুলালই এই কাজ করেছে।