এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সাফল্যের অন্যতম সৈনিক তিনিই। এবার জাতীয় স্তরেও দলের বড় দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মুহূর্তে দিল্লীতে। সংসদের বাদল অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি। বৃহস্পতিবার সেখানে দু’দফায় দলের সাংসদদের নিয়ে জরুরি বৈঠক সেরেছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে এদিন সংসদের ভিতরে, বাইরে একাধিক ইস্যুতে আক্রমণের ঝাঁজ আরও বাড়িয়েছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, একুশের বিধানসভা ভোটে এই অভাবনীয় সাফল্যের পর কেন্দ্রবিরোধী সুর আরও চড়ানোর বার্তা দিতে এবারের অধিবেশন চলাকালীন অভিষেক দিল্লীতে সাংবাদিক বৈঠক করবেন, জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলির মুখোমুখি হবেন। এটাই রাজধানীর বুকে অভিষেকের প্রথম সাংবাদিক বৈঠক হতে চলেছে। দু’বার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর আগে কখনও তিনি দিল্লীতে এ ধরনের সম্মেলন করেননি। ফলে জাতীয় রাজনীতিতে আরও এগিয়ে যেতেই যে অভিষেকের এই পদক্ষেপ, তা খানিক পরিষ্কার।
প্রসঙ্গত, সংসদের বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের হাতে একাধিক ইস্যু। নয়া মাত্রা যোগ করেছে পেগাসাস বিতর্ক। মঙ্গলবার সংসদের বাইরে পোস্টার হাতে এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পর বুধ ও বৃহস্পতিবার সংসদের অভ্যন্তরে চাপ বাড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। এদিন তো রাজ্যসভাতেও ফোনে আড়ি পাতা প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে চাপে ফেলেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর হাত থেকে বক্তৃতার কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলতে দেখা গেল তাঁকে। পরে তিনি সেটি ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহের আসনের দিকে ছুঁড়ে দেন। এভাবেই ধীরে ধীরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নিজেদের অস্ত্রে আরও শান দিচ্ছেন তৃণমূল সাংসদরা।
উল্লেখ্য, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হওয়ার পর এটাই অভিষেক বন্দ্যপাধ্যায়ের প্রথম দিল্লী সফর। রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে তৃণমূল যখন সর্বভারতীয় স্তরে আরও প্রবলভাবে নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে চাইছে, তখন দিল্লী সফরে অভিষেক কী ভূমিকা নেন, সেদিকে নজর ছিলই রাজনৈতিক মহলের। এদিন সকাল থেকে দলের অন্য সাংসদদের সঙ্গে সংসদেই ছিলেন অভিষেক। সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তিনি। সংসদের অধিবেশন শুরুর আগে সংসদ ভবনে তৃণমূলের কার্যালয়ে তিনি একটি বৈঠক করেন। এরপর আবার অধিবেশন সাময়িক মুলতুবি হতেই সোজা অভিষেক-সহ তৃণমূল সাংসদরা চলে যান রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের দিল্লীর বাসভবনে। সেখানে মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করেছিলেন আরেক রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। সেখানেও প্রশান্ত কিশোরদের নিয়ে জরুরি আলোচনা সারেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জোড়া বৈঠকেই তিনি স্থির করে দিয়েছেন সংসদে দলের রণকৌশল। এবার তাঁর নিজের সাংবাদিক বৈঠকে ঠিক কী বার্তা দেন, সেদিকেই রাজনৈতিক মহল তাকিয়ে।