ইতিমধ্যেই পেগাসাস কাণ্ডে সরগরম ও তোলপাড় ভারতের রাজনীতি। ফোনে নজরদারি চালানোর অভিযোগে সংসদের বাদল অধিবেশনে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে জানা গিয়েছে, নজরদারি তালিকায় নাম রয়েছে নাগা বিদ্রোহী সংগঠন এনএসসিএন (আইএম)-এর বেশ কয়েকজন নেতার। প্রোজেক্ট পেগাসাসে যুক্ত এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এনএসসিএন (আইএম)-এর একাধিক নেতার ফোনে নজরদারি চালানো হয়। ওই তালিকায় নাম রয়েছে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা আতেম ভাসুম, আপাম মুইভা, অ্যান্টনি নিংখান, ফুনথিং শিমরাং ও এন কিতভি ঝিমোমি।
অভিযোগ, ইজরায়েলী স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে নাগা বিদ্রোহী নেতাদের ফোনে নজরদারি চালানো হয়েছে। এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেয়নি এনএসসিএন (আইএম)। বলে রাখা ভাল, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, অসম ও মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে নাগা স্বাধীনভূমি বা ‘নাগালিম’ গড়ার ডাক বহুদিনের৷ এই দাবিতে অনেক দিন ধরেই জঙ্গি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন৷ সংগঠনটি দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার পর মুইভা গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে কেন্দ্র৷ কিন্তু সমস্ত আলোচনার থমকে আছে এনএসসিএন(আইএম)-এর দুটি দাবির উপর। গত ২০১৫ সালে কেন্দ্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে নাগা বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। তারপর মাঝখানে কয়েকটা বছর কিছুটা শান্ত থাকলেও, ফের সক্রিয় হয়েছে তারা। এনএসনিএন অভিযোগ জানিয়েছে, ভারত সরকার ৫ বছর আগের চুক্তিতে তাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করছে না। রাজ্যের সঙ্গে পৃথক পতাকা এবং পৃথক সংবিধানের শর্ত না মানলে ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বের ১৬টি সংবাদমাধ্যম মিলে ‘পেগাসাস প্রোজেক্ট’ নামে একটি তদন্ত শুরু করে। সম্প্রতি সেই রিপোর্টের কিছু অংশ সামনে এসেছে। তারপরই ভারত-সহ বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ, ইজরায়েলী স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মদতে আড়ি পাতা হচ্ছে দেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ফোনে। পাশাপাশি, আড়ি পাতা হচ্ছে মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্যদের ফোনে এবং আরএসএস নেতাদের ফোনেও। শুধু বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নন, দেশের একাধিক সাংবাদিক, বিরোধী নেতা-নেত্রী, ব্যবসায়ীদের ফোনে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছে বলে অভিযোগ।