১৯৯৩-এর ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে যুব কংগ্রেসের রাইটার্স বিল্ডিংস অভিযানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল ১৩ জন কর্মী-সমর্থকের। সেই থেকে ওই দিনটি শহীদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই ২১ জুলাই, শহীদ দিবসকে জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে উত্তরণ ঘটাতে চাইছে তৃণমূল। আগামী কালের সভা থেকেই চব্বিশের সুর বেঁধে দিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, মমতা এবং অভিষেকের বক্তৃতার সিংহ ভাগ জুড়ে থাকবে বিজেপির বিরোধিতা। কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করার পাশাপাশি চব্বিশের ভোটে দিল্লী থেকে মোদী হঠানোর ডাক দেবেন মমতা, অভিষেক।
প্রসঙ্গত উনিশের লোকসভা ভোটের আগেও ২০১৮ সালের একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বিজেপি-কে হঠানোর ডাক দিয়েছিলেন দিদি। ধর্মতলার সভা মঞ্চ থেকেই সেবার বলেছিলেন, উনিশের উনিশে জানুয়ারি ব্রিগেডে সভা করবেন। দেশের সমস্ত বিরোধী নেতাকে এক মঞ্চে নিয়ে আসবেন বলেও জানিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। করেও ছিলেন। শত্রুঘ্ন সিনহা থেকে ওমর আবদুল্লা, তেজস্বী যাদব, জিগনেস মিভানিরা এসেছিলেন ব্রিগেডে। ইউনাইটেড ইন্ডিয়া মঞ্চে বন্দে মাতরমের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল ইনকিলাব স্লোগান।
তবে সেবার সাফল্য না এলেও একুশের ভোটে বিজেপির বিজয়রথ থামিয়ে দিয়ে এখন দ্বিগুণ আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল। পর্যবেক্ষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে একুশের ভোটযুদ্ধের মতো এত বড় চ্যালেঞ্জের মুখে মমতাকে পড়তে হয়নি। এবং সেই চ্যালেঞ্জ হইহই করে জিতে নিয়েছে তৃণমূল। একুশের ভোটে অভিষেকও কার্যত রোদে তেতেপুড়ে বাংলা চষে ফেলেছিলেন। এই জয়ের পরে তাঁর নেতৃত্ব নিয়েও আর সংশয় নেই। সেই অভিষেককে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। নতুন দায়িত্বে প্রথম একুশের সভায় কাল বক্তৃতা দেবেন তরুণ এই নেতা।
এমনিতে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর অভিষেক আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলন করেই জানিয়েছিলেন, তাঁর লক্ষ্য দেশের কোণায় কোণায় তৃণমূলকে নিয়ে যাওয়া। এও বলেছিলেন, যে রাজ্যে যাব সেখানে সরকার গড়ার জন্যই যাব। আগামী বছর গোড়ায় পাঁচ রাজ্যের ভোট রয়েছে। ২০২৩-এ ত্রিপুরারও ভোট। সেদিক থেকে অভিষেক একুশের সভায় কোনও পরিকল্পনার কথা জানাবেন, মনে করছে দলের একাংশ এবং রাজনৈতিক মহল। বিজেপি বিরোধী শক্তিকে একজোট করতে মমতা অন্য সর্বভারতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলিকে কী বার্তা দেন তাও দেখার।