১৯৯৩-এর ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে যুব কংগ্রেসের রাইটার্স বিল্ডিংস অভিযানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল ১৩ জন কর্মী-সমর্থকের। সেই থেকে ওই দিনটি শহীদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই ২১ জুলাই, শহীদ দিবসকে জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে উত্তরণ ঘটাতে চাইছে তৃণমূল।
আগেই দল জানিয়েছিল এবার দিল্লী-সহ একাধিক রাজ্যে ২১ জুলাই পালন করা হবে। জানা গিয়েছিল, ত্রিপুরার আগরতলায় অনেক গুলি জায়গায় মমতার ভাষণ শোনানোর ব্যবস্থা থাকছে এবার। তামিলনাড়ুতে তৃণমূল নেত্রীকে ‘আম্মা’ হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে ২১-এর সমাবেশের আগে। চলছে দেওয়াল লেখা। পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডেও হবে শহীদ দিবস পালন।
করোনার জন্য গতবারের মতো এবারও দল দিনটি উদযাপন করবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের লাইভ ভাষণ শোনা যাবে দেশের বড় শহরগুলিতে। তার মধ্যে বিশেষ আয়োজন হচ্ছে রাজধানীতে। দিল্লীর কনস্টিটিউশন ক্লাবে বসানো হচ্ছে জায়েন্ট স্ক্রিন। সেখানেই বিজেপি বিরোধী দলগুলির প্রধান এবং প্রথমসারির নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
আগে ঠিক ছিল সাউথ অ্যাভিনিউতে দলের দিল্লী দফতরে প্রতিবারের মতো এবারও পালিত হবে ২১ জুলাই। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বদলে রাজধানীর অনুষ্ঠান কনস্টিটিউশন ক্লাবে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দিল্লীতে কনস্টিটিউশন ক্লাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনেদের পাশাপাশি বিশ্বের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সেখানে নিত্য যাতায়াত।
তৃণমূল বা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেউই মুখ ফুটে ঘোষণা না করলেও দলের নানা সিদ্ধান্ত এবং কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট তৃণমূলের এবার লক্ষ্য দিল্লী চলো। যেমন বিধানসভা ভোটের প্রচারে জোড়া ফুলের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট মিটতেই মমতা তাঁকে দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করেছেন। দলে ফিরিয়ে এনেছেন একদা তৃণমূলে তাঁর ডেপুটি মুকুল রায়কে, জাতীয় রাজনীতির গলি থেকে রাজপথ যাঁর নখদর্পণে।
পাশাপাশি প্রশান্ত কিশোর আলোচনা চালাচ্ছেন জাতীয় স্তরের নেতাদের সঙ্গে। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড বিধানসভার ভোট ছাড়াও আছে। আগামী বছরই আছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সব মিলিয়ে সর্বভারতীয় রাজনীতি আগামী দিনে যে মমতাময় হয়ে উঠতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।