রাজ্যে এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত গ্রাহকদের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড যুক্ত করা হয়নি, তাঁদের দ্রুত চিহ্নিত করে সেই কাজ সেরে ফেলার নির্দেশ দিল নবান্ন। এ জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোবাইল ফোনের অ্যাপের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক ডেটা কালেকশন করে তা যুক্ত করতে হবে রেশন কার্ডের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, এ জন্য ২৫ জুলাই থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেবে জেলা প্রশাসন। তবে কোনও কারণে ১০ আগস্টের মধ্যে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর যুক্ত করা না গেলে সেক্ষেত্রে গ্রাহকরা নিকটবর্তী স্কুল, আইসিডিএস সেন্টার বা নির্দিষ্ট সরকারি অফিসে গিয়ে তা করতে পারবে। এমনটাই খবর নবান্ন সূত্রে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতিদিন ১০ লক্ষ গ্রাহকের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য জেলাশাসকদের যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, আগস্টের মধ্যেই গ্রাহকদের জন্য ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প শুরু করে দিতে চায় রাজ্য সরকার। তাই তার আগেই এই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করার জন্য খাদ্য এবং খাদ্য সরবরাহ দফতরের তরফে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওয়েবেলকে। খাদ্যসাথী প্রকল্পে প্রতিদিন সাড়ে সাত লক্ষ মানুষের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করা হচ্ছে। গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে ‘বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন’ করে এই কাজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে চার কোটি গ্রাহকের এই সংযুক্তিকরণের কাজ শেষ করা গিয়েছে। আগস্টের মধ্যেই প্রায় ১০কোটি গ্রাহকের নাম নথিভুক্ত হবে।
এদিন বৈঠকে মুখ্যসচিব জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন, এই কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য। যাতে প্রতিদিন প্রায় ১০ লক্ষ গ্রাহককে এই সুবিধা দেওয়া যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, ২৫ জুলাই পর্যন্ত এই কাজ করার কথা ছিল। এদিন বৈঠকে ঠিক হয়েছে ২৫ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে যাতে কোনও গ্রাহক বাদ না পড়েন। বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পরেও যদি কোনও কারণে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার লিঙ্ক না হয় সেক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে ক্যাম্প করে এই কাজ সেরে ফেলতে হবে জেলা প্রশাসনকে।
খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, একবার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর যুক্ত করা গেলে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প বাস্তবায়িত করা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে গ্রাহকের মোবাইলে এসএমএস পাঠানো যাবে যে তিনি কত পরিমাণ রেশন পাওয়ার জন্য উপযুক্ত। অন্যদিকে, এদিন বৈঠকে রাজ্যের দুস্থ মহিলাদের স্বনির্ভর করতে ‘মাতৃবন্দনা’ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। এই প্রকল্পে নতুন গোষ্ঠীগুলিকে পাঁচ বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে নবান্ন সূত্রে খবর।