গত বছরের শেষেই উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে আইন করা হয়েছে। দেশের আরও কয়েকটি রাজ্যও লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে আইন করার কথা ভাবছে। কিন্তু মহারাষ্ট্রে এখনও লাভ জেহাদ আইন হয়নি। তা সত্ত্বেও তথাকথিত লাভ জেহাদ নিয়ে ওই রাজ্যেও যে অনেকে সক্রিয়, এবার মিলল তার প্রমাণ। গত সপ্তাহে নাসিকে একজোড়া যুবক-যুবতীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের কার্ড প্রকাশ্যে আসতেই বাধে গণ্ডগোল। কারণ তাতে দেখা যায়, পাত্রী হিন্দু, কিন্তু পাত্র মুসলমান। যদিও দু’পক্ষের বাড়ির সম্মতিতেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একদল লোকের ধারণা, এই বিয়ে আসলে লাভ জেহাদের পরিণতি। তাদের বিক্ষোভেই বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে বাধ্য হল দু’টি পরিবার।
বিক্ষোভকারীদের চাপে নাসিকের ওই বিবাহ অনুষ্ঠান বাতিল হলেও পাত্রীর পরিবার জানিয়েছে, তারা মেয়ের পছন্দে বাধা দেবে না। তাদের বক্তব্য, এক্ষেত্রে জোর করে ধর্মান্তরের চেষ্টা হয়নি। ইতিমধ্যে কোর্টে ওই বিয়ে রেজিস্ট্রি করানো হয়েছে। পাত্রীর বাবার নাম প্রসাদ আদগাঁওকর। তিনি নাসিকের একজন নামকরা মণিরত্নের ব্যবসায়ী। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে রসিকার কিছু শারীরিক ত্রুটি আছে। মেয়ের বিয়ে দিতে তাঁদের সমস্যা হচ্ছিল। কিছুদিন আগে মেয়ের স্কুলের বন্ধু আসিফ খান জানায়, সে রসিকাকে বিয়ে করতে রাজি। দু’টি পরিবারের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে জানাশোনা ছিল। তাই তারা এই বিয়েতে রাজি হয়ে যায়।
প্রসাদ জানান, মে মাসে দু’টি পরিবারের উপস্থিতিতে কোর্টে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। স্থির হয়েছিল, ১৮ জুলাই বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। নাসিকের এক হোটেলে দুপক্ষের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যে নিমন্ত্রণপত্রের একটি ছবি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বিয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মেসেজ আসতে থাকে। অনেক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই স্থানীয় একটি সংগঠন প্রসাদকে আলোচনার জন্য ডাকে। সেখানে তাঁকে বার বার বলা হয়, এই বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করা উচিত। প্রসাদের বক্তব্য, নানা মহল থেকে তাঁর ওপরে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তাই তিনি বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।