রবিবার ইউরো কাপের ফাইনালে হারের জন্য যাবতীয় দায় দলের তিন কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলারের উপর চাপাল ইংরেজ সমর্থকরা। ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে যাওয়ার জন্য ইংল্যান্ডের তিন কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলার মার্কাস র্যাশফোর্ড, জ্যাডন স্যাঞ্চো ও সাকা-কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে নেট মাধ্যমে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা হয়েছে। তবে এমন ন্যক্কারজনক ও ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও প্রাক্তন ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন। এমনকী বাধ্য হয়ে এই বিষয়ে বিবৃতিও দিয়েছে ইংল্যান্ডের ফুটবল ফেডারেশন।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টুইটারে লিখেছেন, “এই ইংল্যান্ড দলের সবাইকে বীরের সম্মান দেওয়া উচিত। নেট মাধ্যমে ওদের আক্রমণ করা মোটেও কাম্য নয়। যে বা যারা জাতীয় দলের ফুটবলারদের কটাক্ষ করেছে, তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।” ইংল্যান্ডের ফুটবল ফেডারেশন বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ফুটবলারদের পাশে দাঁড়িয়ে দোষীদের কঠিনতম শাস্তি দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। খেলা থেকে বর্ণবৈষম্য দূর করতে সবরকম ভাবে আমরা চেষ্টা করে এসেছি। ভবিষ্যতেও সেই চেষ্টা বজায় থাকবে। দোষীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। সরকারের কাছে এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
সমর্থকদের এহেন অভব্য আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেনও। কেপি টুইটারে লিখেছেন, “আমাদের দেশের অনেক কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ ম্যাচের পর প্রাণ হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। ভাবলেই গা শিউরে ওঠে। ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে মানুষের প্রতি মানুষের এমন ব্যবহার কি আদৌ কাম্য? এরপরেও কি আমাদের দেশে ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ হওয়া উচিত?”
রবিবার র্যাশফোর্ড ও স্যাঞ্চো পেনাল্টি নষ্ট করার পর সবার নজর সাকার দিকে ছিল। তবে চাপের মুখে গোল হাতছাড়া করেন ১৯ বছরের সাকাও। এরপর থেকেই নেট মাধ্যমে এই তিন ফুটবলারকে প্রবল কটূক্তি করা শুরু হয়। ইউরো শুরু হওয়ার আগে বেশ ঘটা করে বর্ণবিদ্বেষের প্রতিবাদ জানিয়েছিল গ্যারেথ সাউথগেটের দল। সমাজ থেকে এই ব্যাধি দূর করার জন্য হাঁটু মুড়ে বেশ কয়েকটা ম্যাচে শপথ নিয়েছিল হ্যারি কেনের সতীর্থরা। দেশের জাতীয় দলে বিভিন্ন বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মিশেল হওয়ায় প্রশংসাও কুড়িয়ে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু একটা ফাইনালে হারে পর সেই গৌরবে কালি ছেটাল সসমর্থকদের এমন কার্যকলাপ। শুধু বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা নয়, ম্যাচ হারের পর লন্ডনে তাণ্ডব চালিয়েছে ইংরেজ সমর্থকেরা। তবে ইতিমধ্যেই বর্ণবৈষম্যমূলক অপরাধকে দমন করার জন্য তদন্ত শুরু করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।