তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে বাংলার কয়েক কোটি ছাত্র-ছাত্রীর জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পরে তার কন্যাশ্রী প্রকল্প যেভাবে বাংলার সমস্ত প্রত্যন্ত এলাকাতেও নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক উন্নয়ন করেছে, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড এর ফলে বাংলার সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষা এবং গবেষণা করার পথ আরো প্রশস্ত হয়েছে। কিন্তু এই স্বপ্নের প্রকল্প বিশ বাঁও জলে ফেলার চেষ্টা ইতিমধ্যেই করতে শুরু করেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি অমিত শাহকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাশাপাশি নতুন তৈরি সমবায় মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র রাজ্যের হাত থেকে সমবায় আন্দোলন এবং সমবায় ব্যাঙ্ক গুলির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা বলে মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে আরও ভয়ঙ্কর গুরুতর উদ্দেশ্য। বাংলার বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে ছাত্র-ছাত্রীদের মাথাপিছু যে গ্যারান্টি মুক্ত ১০ লক্ষ টাকার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন, তারা যেহেতু আগাগোড়া সমবায় ব্যাংকের মাধ্যমে করার পরিকল্পনা করেছিলেন, সেটাই আটকানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে সমবায় ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত শুভেন্দু অধিকারীর পরিকল্পনায় মমতাকে জব্দ করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, গতবছর সংসদের সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাংসদদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে রাতারাতি অর্ডিন্যান্স এনে রাজ্যের হাত থেকে সমবায় ব্যাঙ্ক গুলির উপরে ছড়ি ঘোরানোর জন্য আইন সংশোধন করে ছিল মোদী সরকার। এবারে সরাসরি সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহের হাত ধরে রাজ্যগুলির কাছ থেকে সমবায় ব্যাঙ্কের যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে। এর ফলে বাংলায় যে লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী শিক্ষা ঋণের জন্য আবেদন করছেন, তা মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের মরিয়া প্রচেষ্টা, এমনই অনুমান রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
১০ই জুলাই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে লোনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩৫৫ কোটি। গত ৩০শে জুন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও পর্যন্ত মোট লোনের আবেদন জমা পড়েছে ২৫,৮৪৭ টি।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা। কোনও জামিনদার লাগবে না। জামিনদার হবে রাজ্য সরকার। সমবায় ব্যাঙ্কের উপরের রাজ্য সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকলে এই ধরনের ঋণ দেওয়ার কোনো ক্ষমতাই থাকবে না রাজ্য সরকারের।