আগামী ১৯শে জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন চলবে প্রায় এক মাস, ১৩ ই আগস্ট পর্যন্ত। এবার সংসদে তৃণমূলের অন্যরূপ দেখবে গোটা দেশ। কার্যত বিরোধী শিবিরে অন্যতম সক্রিয় বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করবে তৃণমূল। একদিকে দেশজুড়ে লাগাতার পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের আকাশছোঁয়া দাম অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবস্থা এবং ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতা ইস্যুতে মোদী সরকার কোণঠাসা করতে চলেছে তৃণমূল।
এর পাশাপাশি আরও একটি বিষয় মোদী সরকারের জবাবদিহি চেয়ে সংসদে ঝড় তুলতে চাইছে তৃণমূল। তা হল, দিল্লীতে ১০ নম্বর, আকবর রোডে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার বাড়িতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর যাওয়া এবং তাঁদের তথাকথিত বৈঠকের অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক শুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, ‘পেট্রোপণ্যের নজিরবিহীন অনৈতিক মূল্যবৃদ্ধি এবং সার্বিক করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের ব্যর্থতার পাশাপাশি দেশজুড়ে করোনা টিকার হাহাকার নিয়ে সংসদে সরব হবে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে অন্য কোনও দলকে পাশে পাওয়া বা না পাওয়ার পরোয়া করবে না দল’।
তৃণমূলের লোকসভার এক সাংসদ জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারী এবং সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার বৈঠক নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলবেন তাঁরা। সরকারের জবাব চাইবেন। সলিসিটর জেনারেল এর অপসারণের দাবিতে প্রয়োজনে সংসদের হস্তক্ষেপ চাওয়া হতে পারে। অতএব রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপর্যয়ের পর এই প্রথম সংসদের অধিবেশনে দুটি কক্ষেই জাতীয় এবং রাজ্য ভিত্তিক ইস্যুতে সরব হতে চলেছে তৃণমূল। একদিকে যখন জাতীয় স্তরে মোদি ও বিজেপি বিরোধী একটি জোট মহাজোটের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তখন সংসদে তৃণমূলের এই নতুন ভূমিকায় নজর থাকবে গোটা দেশের। এমনিতেই দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ছত্রভঙ্গ। অন্তর্কলহ অন্তর্দ্বন্দ্বে জেরবার কংগ্রেস সংসদে মোদি সরকারকে কোণঠাসা করতে কতটা সক্ষম হবে তা নিয়ে প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।
সূত্রের খবর, এমন এক পরিস্থিতিতে তৃণমূল সাংসদদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, সংসদের দুই কক্ষ বিজেপি বিরোধিতায় এক চুল জমি অন্য দলকে যেন না ছাড়া হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের কাজকর্ম এবং কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনা ছাড়াও পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা, করোনার টিকার ঘাটতি ও তা বন্টনে বিমাতৃসুলভ আচারণ ছাড়াও অন্যান্য ইস্যুতে ঘাসফুল শিবির কার্যত চেপে ধরতে চলেছে মোদী সরকারকে।