কোভিড পরিস্থিতির জেরে গতবছরেই বাংলায় ফিরে এসেছেন লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। যার ফলে বেড়েছে একশো দিনের কাজের কদর। এমনকি, একশো দিনের কাজে সম্প্রতি ভারতে শীর্ষস্থানও অধিকার করেছে বাংলা। আর এই কাজের জন্য জব কার্ড রিইস্যু করতে গিয়েই মাথায় হাত বাবলু গড়াই, হারাধন গড়াইদের। দশ বছর আগে মৃত ‘জেঠু’ শুধু জব কার্ড পাচ্ছেন এমন নয়, দিব্যি সরকারের দেওয়া টাকাও তুলছেন!
এই তালিকা দেখেই মাথায় হাত বাবলু-হারাধনদের। অভিযোগ, ভুয়ো জবকার্ড বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছেন এলাকার বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রঘুনাথপুরের ২ নম্বর ব্লকের নীলডি গ্রামে। বিজেপি পঞ্চায়েত প্রধানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূলও। পেশায় শ্রমিক বাবলু গড়াইয়ের অভিযোগ, তাঁর জ্যাঠামশাই বঙ্কিম গড়াই আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে মারা গিয়েছেন। অথচ, এতদিন ধরে তাঁর নামে জব কার্ডে টাকা তোলা হচ্ছে। অভিযোগ, এই টাকার এক টাকাও পাননি বাবলু। এমনকী, তিনি জানতেনও না তাঁর ‘জেঠুর’ নামে এখনও সরকারের দেওয়া জব কার্ড রয়েছে। সম্প্রতি, নিজের জবকার্ড রিইস্যু করতে গিয়ে সেই তালিকায় নিজের জেঠুর নামও চোখে পড়ে বাবলুর।
প্রায় একই অভিযোগ জানিয়েছেন হারাধন গড়াইও। হারাধনবাবুর কথায়, “আমরা যখন লিস্ট দেখতে গেলাম তখন দেখলাম সেই লিস্টে কেবল মরা মানুষের নাম আছে এমন নয়, নাবালক-নাবালিকা এমনকী বিবাহিত মহিলারও নাম আছে। যেসব নাবালকদের নাম আছে তারা সব চোদ্দ পনের বছরের ছেলে মেয়ে। এখানকার স্কুলেই পড়াশোনা করে। তারা কী করে জবকার্ড পায়? টাকাই বা পায় কী করে? বোঝাই যাচ্ছে যে দুর্নীতি চলছে।”
জব কার্ড প্রতারণা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শাসকদল তৃণমূলও। তাদের অভিযোগ, নীলডির পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় বিজেপি থাকার জন্য তারা যা ইচ্ছে তাই করছে। জব কার্ড নিয়েও দুর্নীতি করছে। এই মর্মে মহকুমা শাসককে একাধিক নথি দিয়ে লিখিত জমা দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি স্বপন মেহতা এই বিষয়ে বলেন, “বিজেপি দুর্নীতি করছে। ভুয়ো জব কার্ড বানিয়ে, অ্যাকাউন্ট বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান। তাই আমরা সমস্ত নথি প্রমাণস্বরূপ বিডিও ও এসডিও-কে জমা দিয়েছি। আমরা এর তদন্ত চাই।”