জেলাস্তরে সাংগঠনিক রদবদল হতে পারে তৃণমূলে। আগামী সপ্তাহেই তা হতে চলেছে, সম্ভাবনা এমনটাই। তার আগে শুক্রবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিন হলেও এ দিন বিধানসভায় আসেননি মুখ্যমন্ত্রী, আর নবান্নে স্যানিটাইজেশনের কাজ হওয়ার কারণে সেখানেও যাননি তিনি। তাই তৃণমূল নেত্রীর বাড়িতে যান পিকে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়েছে দু’জনের মধ্যে। প্রশান্তের কৌশলে ভর করে তৃতীয়বারের জন্য নবান্ন দখল করেছেন মমতা। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচন তো বটেই, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের ঘুঁটি সাজানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পিকে-কে। জুন মাসেই সর্বভারতীয় তথা রাজ্য স্তরের সংগঠনে খোলনলচে বদলে দিয়েছেন মমতা। রাজনীতির বিশ্লেষকদের মতে, প্রশান্তের পরামর্শেই দলের সাংগঠনের সর্বস্তরে বদল আনছেন তিনি। আর জেলাভিত্তিক সংগঠনের রদবদলের আগে প্রশান্তের সঙ্গে বৈঠক করলেন মমতা।
প্রসঙ্গত, গত ৫ই জুন তৃণমূল ভবনে বৈঠক করে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ম চালুর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রাজ্যের কোনও মন্ত্রীকে আর জেলা সভাপতি বা দলের অন্য কোনও সাংগঠনিক পদে রাখা হবে না। আবার দলের কোনও পদাধিকারীকে নিয়োগ করা হবে না প্রশাসনিক পদে। জেলাস্তর থেকে একেবারে ব্লকস্তর পর্যন্ত এই নিয়ম কার্যকর থাকবে বলে ওইদিনই জানিয়েছিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নতুন নিয়মের ফলে অন্তত চারটি জেলার জেলা সভাপতি বদল করতে হবে মমতাকে। কিংবা বদল আনতে হবে মন্ত্রিসভায়। উত্তর ২৪ পরগনার সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্তমানে বনমন্ত্রী, হাওড়া গ্রামীণের সভাপতি পুলক রায় বর্তমানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দায়িত্বে, পূর্ব মেদিনীপুরের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বর্তমানে সেচমন্ত্রী এবং পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ রয়েছেন প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের দায়িত্বে। এদের সকলকেই যে কোনও একটি পদ ছাড়তে হবে। দলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দ্রুত এই রদবদলগুলি সেরে ফেলে উপনির্বাচন এবং পুরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে নেমে পড়বে তৃণমূল। সম্প্রতি রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যে বিধানসভা উপনির্বাচনের পরিবেশ রয়েছে। কারণ রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন উপ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করলেই পুর নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করবে শাসক শিবির। মনে করা হচ্ছে, এই সমস্ত বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই হতে চলেছে মমতা- প্রশান্তের বৈঠক।