মাঝে আর মাত্র দু’সপ্তাহ বাকি। তারপরেই শুরু হতে চলেছে টোকিও অলিম্পিক্স গেমস। করোনা আবহের জেরে ইতিমধ্যেই ফাঁকা স্টেডিয়ামে অলিম্পিক্স আয়োজিত হবে বলেই জানিয়েছে টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষ। ভারতের হয়ে অংশ নিতে প্রায় ২৬ জন অ্যাথলিট জাপানের পথে রওনা দেবেন। এই স্কোয়াডে রয়েছেন তামিলনাড়ুর অ্যাথলিট ভি রেবতী। ৫৩.৫৫ সেকেন্ডে ৪০০ মিটার দৌড়ে টোকিও গেমসের টিকিট নিশ্চিত করেছেন এই লড়াকু মেয়েটি।
৪×৪০০ মিটারের ভারতীয় মহিলা দলের অন্যতম সদস্যা তিনি। আর তার এই সাফল্যের সময়ে সামনে উঠে এল তার কষ্টে ভরা নির্মম অতীত। দুর্ভিক্ষ, পিতৃতান্ত্রিক সমাজের নানা কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে থেকেও যেভাবে তিনি লড়াই করে এই আন্তর্জাতিক সাফল্যের রাজপথে উঠে এসেছেন, তা এককথায় অনবদ্য। মাত্র ৭ বছর বয়সে ছোট্ট রেবতী নিজের বাবাকে হারিয়েছিলেন। ঠিক তার ১ বছরের মাথায় মারা যায় তাঁর মা-ও। লড়াইয়ের শুরু সেদিন থেকেই।
কষ্টের এখানেই শেষ নয়। এরপর রেবতীর দায়িত্ব তুলে নেন তাঁদের দিদা আরাম্মাল। নিজেদের জেলার এক সরকারি স্কুলের হোস্টেলে থেকে তাঁরা পড়াশোনা করতেন। তাঁদের দিদা মাদুরাইয়ে, সাক্ষীমঙ্গলম গ্রামে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বলা ভাল রেবতীর অ্যাথলেটিক্সকে নিয়ে স্বপ্নপূরনের পথে সর্বময় উৎসাহদাতা ছিলেন তাঁর দিদা-ই। বর্তমানে সাইয়ের পাতিয়ালার সেন্টারে অনুশীলন করছেন রেবতী।
তাঁর পুরোনো অতীত সম্পর্কে বলতে গিয়ে রেবতী জানান, “দুর্ভিক্ষের কারনেই আমাদেরকে সরকারী স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দিদা মাসে একবার আমাদের সাথে দেখা করতে আসতেন। আমরা দেখতাম সবার বাবা-মা সপ্তাহে তাঁদের সাথে একবার করে দেখা করত। সেটা দেখার পরে আমাদের মন খারাপ হত। আর আজকের এই সুখময় দিনটি আমার পক্ষে দেখা সম্ভব হত না যদি না ‘পাতি’ (দিদা) থাকতেন।”