কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ গিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরী। পরিবর্তে মোদীর মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন বাংলার চার সাংসদ। তবে সাত বছরের মোদী মন্ত্রিসভায় এবারও কোন পূর্ণমন্ত্রী পেল না বাংলা। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হলেন নিশীথ প্রামানিক, জন বার্লা, সুভাষ সরকার, শান্তনু ঠাকুররা। আর তাই নিয়েই এবার টিপ্পনী তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কুনাল, তবে তাঁর যুক্তিতে এই পুরস্কার আসলে সান্ত্বনা পুরস্কার।
কুনাল ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘পূর্ণমন্ত্রী নন বাংলা থেকে চার রাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁদের মন্ত্রিত্বের শুভেচ্ছা। তবে দামি মানিব্যাগে রাখলে অচল পয়সা কি আর সচল হয়? বাবুল দেবশ্রী রাজ্যকে কি দিয়েছেন হিসেবটা চান। বুঝবেন নতুনদের এই সান্ত্বনা পুরস্কারের দাম কতটুকু। ভোটের যে অঙ্কে এই খেলা, সে অঙ্ক মিলবে না’।
বিজেপি নতুন মন্ত্রিসভা গড়তে শোষিত নিপীড়িত বঞ্চিত সমাজের প্রতিনিধি বেছে নিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মত, দেশ জুড়ে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রাজনীতি জারি রাখতেই বিজেপির এ হেন রণকৌশল। সেই কারণেই বাংলা থেকে ঠাঁই পেলেন নিশীথ, শান্তনু, জন বার্লারা। বাংলায় ভোট মিটেছে, কিন্তু আগামী দিনে এই প্রতিনিধি বাছাই ডিভিডেন্ট দিতে পারে বলেই মনে করছে বিজেপি। শান্তনু ঠাকুরের প্রতিনিধিত্ব মতুয়া সমাজে জমি বাড়াবে। ভবিষ্যতে নিশীথ-জন বার্লারা টানবেন আদিবাসী চা শ্রমিক-রাজবংশী ভোট।, এই সমীকরণেই আস্থা রাখছে বিজেপি, মত রাজনৈতিক মহলের। আর সম্ভবত বিজেপির এই সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং তত্ত্বকেই চ্যালেঞ্জ করে কুনাল ঘোষ বলছেন, ভোটের যে অঙ্কে এই খেলা সে অঙ্ক মিলবে না।
বলাই বাহুল্য এবার ভোটেও সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রাজনীতি ধরেই বাংলা দখলে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার কৌশলের সামনে তা মুখ থুবড়েই পড়েছে। কুনালের আত্মবিশ্বাসের প্রথম কারণ এটাই।
এবার মন্ত্রী ঝাড়াই বাছাই নিজের হাতে করেছেন নরেন্দ্র মোদী। যাঁদের নাম মন্ত্রিতালিকা থেকে বাদ গিয়েছে, তাদের যে তিনি ব্যর্থ মনে করছেন সে বিষয়ে সন্দেহের জায়গা নেই। আর সেই রিপোর্ট কার্ড হাতিয়ার করেই কুনালও প্রশ্ন শানাচ্ছেন, বাবুল-দেবশ্রী বাংলাকে কী দিয়েছে? নিশীথদের সম্পর্কে তাঁর পর্যবেক্ষণ, তাঁরা অচল পয়সা। অর্থাৎ তাদের কেবল ভোটের বাজি করা হয়েছে, এটাই বলতে চাইছেন তিনি। পূর্ণমন্ত্রী না করে প্রতিমন্ত্রী করার বিষয়টিতে উল্লেখের মধ্যেও রয়েছে কুনালের চাপা শ্লেষ, কারণ সাত বছরে বাংলা একজনও পূর্ণমন্ত্রী পায়নি।